পড়াশোনা না করে মোবাইলেই বেশি মেতে থাকত মেয়ে। তাই নিয়ে বকাবকি করেছিলেন মা। আর তাতেই ঘটে গেল বড়সড় বিপদ। গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে গলসি ১ নম্বর ব্লকের গলি গ্রামে। মৃত ছাত্রীর নাম তিথি মেটে, বয়স ১৭বছর। এমন ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে কিশোরীর পরিবারে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ চুরির অভিযোগে স্কুলেই বিবস্ত্র করে চালানো হল তল্লাশি, অপমানে আত্মঘাতী ছাত্রী
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। সে গলসি সারদা পীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে মোবাইল দেখাকে কেন্দ্র করে তার মায়ের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়। আর তারপরেই ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে কিশোরীকে ঝুলতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। এরপরে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে সে এই ধরনের কাজ করেছে বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি।
মেয়েটির বাবা সোনা সেন জানান, ঘটনাটি ঘটেছে আজ সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ। তিনি তখন ছিলেন না। পেশায় সোনা একজন টোটো চালক। প্রতিদিনকার মতো এদিনও টোটো নিয়ে বেড়িয়েছিলেন সোনা। এদিকে, সকালে মেয়ে পড়তে বসেছিল বাড়িতে। সোনা জানান, সকালে তার মেয়ে পড়ার সময় মোবাইল দেখছিল। তা নিয়ে তার স্ত্রী মেয়েকে একটু বকাবকি করেছিল। এনিয়ে অভিমানে ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ে প্রথমে তিথি দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে গলায় ফাঁস লাগায়। তড়িঘড়ি কিশোরীর মা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু, দরজা ভাঙতে না পেরে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে স্থানীয়রা ঘরের দরজা ভেঙে তিথিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে পড়ুয়াদের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে কোভিড পর্বের পর থেকেই অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হওয়ার ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে মোবাইলের ব্যবহার মারাত্মক হারে বেড়েছে। আর তার ফলে আত্মহত্যার ঘটনাও বেড়েছে। কখনও ফোন ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের বকাবকির জেরে, আবার কখনও আবদার মতো দামি ফোন কিনে দিতে না পারায় আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে পড়ুয়াদের মধ্যে।