স্কুলের ক্লাসরুমে দুই পড়ুয়ার ঝগড়া এবং হাতাহাতি। তাতেই মর্মান্তিক পরিণতি হল এক ছাত্রের। সহপাঠীর ঘুষিতে প্রাণ গেল দশম শ্রেণির এক পড়ুয়ার। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার হুগলি জেলার চাঁপদানি আর্য বিদ্যাপীঠে। মৃত ছাত্রর নাম অভিনব জালান (১৫)। তাকে দ্রুত ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্কুলের সামনে ভিড় জড়ো হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: সৌদির হস্টেল থেকে উদ্ধার ISI থেকে পিএইচডি করা যুবকরে দেহ!
জানা গিয়েছে, বুধবার একটি ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তখন ক্লাসে অন্য শিক্ষকের আসার কথা ছিল। ঠিক তখনই অভিনবের সঙ্গে তার এক সহপাঠীর ঝগড়া বাঁধে। সেই সময় ওই সহপাঠী অভিনবের বুকে সজোরে ঘুষি মারে। ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। ঘুষির আঘাতে অভিনবের হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। সে তখন অজ্ঞান হয়ে যায়। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর বিক্রম গুপ্ত বলেন, ঝামেলার কথা শুনে তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাকে ক্রমাগত সিপিআর দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি এবং মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনায় ছেলেটির বাবা গণেশ জালান স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। পড়ুয়াদের মধ্যে ঝগড়া থামাতে ব্যর্থতার জন্য তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, দুই ছাত্রের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে আর কোনও শিক্ষকই তাতে হস্তক্ষেপ করলেন না। তারা পদক্ষেপ করলে হয়ত তার ছেলের জীবন বাঁচানো যেত। তিনি বোর্ডের কাছে তার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছাত্রের শাস্তির দাবি করেন। জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে অভিনবের দিদিও হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল। এখন ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার বাবা মা।
এদিকে, ছাত্রের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলের সামনে জড়ো হন অন্যান্য অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত ছাত্রের শাস্তির দাবি জানান। পরে পুলিশ এবং রাজনৈতিক দলের কর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।