গরু পাচারকাণ্ড এবং কয়লা পাচারকাণ্ড মিলিয়ে মোট ১০ বার অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল সিবিআই। তবে বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি মোটে একবার মুখ দেখাতে গিয়েছিলেন নিজাম প্যালেসে। এই আবহে এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে গিয়ে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেন সিবিআই তদন্তকারীরা। জানা যায় আপাতত গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা গ্রেফতার করেছে অনুব্রতকে। তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই এই গোচা বিষয়টিতে নাম জড়িয়েছে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলেরও। এই আবহে আজকে সুকন্যার সঙ্গে কথা বলতে বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতর বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। তবে সূত্রের খবর, সিবিআই আধিরাকিকদের ফিরিয়ে দেন সুকন্যা। (আরও পড়ুন: পার্থকাণ্ড কোন ছাড়, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সায়গলের সম্পত্তির পরিমাণে চোখ উঠবে কপালে)
মমতা কয়েকদিন আগেই বেহালায় দাঁড়িয়ে অনুব্রতর সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই নাকি অনুব্রত তদন্তকারীদের অসহযোগিতা করছেন। আর এদিন অনুব্রতর মেয়ের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করলেন সিবিআই তদন্তকারীরা। এক মহিলা-সহ ৪ সিবিআই অফিসার অনুব্রতর বোলপুরের বাড়িতে গেলেও তাঁধের ফিরিয়ে দেন সুকন্যা। সুকন্যা নাকি বলেছেন, ‘আমি আমার মাকে হারিয়েছি, বাবা রয়েছেন হেফাজতে। এখন আমি কারও সঙ্গে কথা বলব না।’
সিবিআই সূত্রে খবর, স্কুল শিক্ষিকা হয়েও কীভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতেই সুকন্যার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, সিবিআই তদন্তকারীদের হাতে এসেছে অনুব্রত মাণ্ডলের এক নয়া সস্থার তথ্য। ২০০৬ সালে তৈরি হওয়া এই সংস্থার নাম নীড় ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেড। আগেই খোঁজ মিলেছিল ANM অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেড নামক এক সংস্থার। নীর ডেভেলপারও নাকি সেই সংস্থার ঠিকানাতেই রেজিস্টার্ড। জানা গিয়েছে এই সংস্থার দুই ডিরেক্টর হলেন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েন। বোলপুরের কালিকাপুরের হারাধন মণ্ডল রোডের ঠিকানায় রেজিস্টার্ড নীর ডেভেলপরারের শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল দেড় কোটি টাকা। অনুব্রত মণ্ডলের ভোলে ব্যোম রাইস মিলেরও ঠিকানা এই হাধারন মণ্ডল রোডে। মোট তিনটি সংস্থার ঠিকানা এটি। অনুব্রতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিশেষ লেনদেন না হলেও সেই সব কোম্পানিতে প্রচুর অর্থের লেনদেন হয়েছে। স্বভাবতই তাই এই সংস্থাগুলির উপর নজর পড়েছে সিবিআই-এর।
আরও পড়ুন: বাড়িতে কত টাকা নগদ রাখা যায়? কী বলছে আয়কর দফতরের নিয়ম
বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখে অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যার নাম উঠে এসেছে। নজরে আছে সুকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এই আবহে বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির বোলপুরের বাড়িতে গিয়ে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা। তার আগে অনুব্রতের ব্যক্তিগত হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারির কাছ থেকে সুকন্যার সম্পত্তির হিসেব চান সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে দাবি, সুকন্যার নামে বোলপুরে জমি, চালকল-সহ একাধিক সম্পত্তি কেনা হয়েছে। তাঁর নামে এত সম্পত্তি কীভাবে হল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।