পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে বাঘাসন গ্রামের গৌতম অধিকারী এবং তাঁর পরিবারের ঘুম উড়েছে গত বেশ কয়েকদিন ধরে। নেপথ্যে তাঁর বাড়িতে ঘটতে থাকা ভূতূড়ে সব কাণ্ড কারখানা। পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার গৌতমের বাড়ির লোকজন ভূতের আতঙ্কে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। শুধউ রাতের বেলা নয়, অভিযোগ, ভূতের 'তাণ্ডব' চলে নিদের বেলাতেও! কেমন সেই তাণ্ডব? অভিযোগ, মাঝে মাঝেই বডি স্প্রে, কসমেটিক্স, জুতো মোবাইলের মতো জিনিস উধাও হয়ে যাচ্ছে বাড়ি থেকে। মাঝে মাঝে মড়া-পোড়া গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আবার ঘরের অ্যাসবেসটসের চালের উপর দিয়ে আওয়াজ করতে-করতে কাউকে ছুটে যেতে শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে গা ছমছমে পরিবেশে দিনের পর দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের।
এলাকাবাসীর কাছে গৌতম অধিকারী সাহসী ছেলে হিসেবেই পরিচিত। এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটলে সিভিক ভলান্টিয়ার গৌতমকে রাতের অন্ধকারেও ছুটতে হয়। দাদা গোপেশ্বর অধিকারী, মা, বউদি, ঠাকুমার পাশাপাশি এবশ্য এখন সে নিজেও ভূতের ভয়ে ভীত। প্রথমে যদিও সেভাবে তাঁরা গুরুত্ব দেননি এই ঘটনাগুলিকে। তবে ভয়ে এখন রাতের বেলাতেও আলো জ্বালিয়ে শুতে হচ্ছে সবাইকে। এই আবহে সোমবার এক ওঝার সঙ্গে পর্যন্ত দেখা করা হয় এই বিষয়ে।
এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে গৌতম জানান, টেবিলে রাখা তাঁর এবং তাঁর বউদির দু’টি মোবাইল ফোন হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায় সোমবার। এরপর বাথরুমের মধ্যে রাখা ফেসওয়াশ, বডি স্প্রে সবই নাকি উধাও হয়ে যায়। মনে হয় কেউ যেন পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁকে টেনে নিয়ে যাবে।
এই ঘটনার কথা সহকর্মীদের জানালে গৌতমকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করেন তাঁরা। কিন্তু সোমবার সহকর্মীরা তাঁর বাড়িতে আসেন। সেই ঘটনার পরীক্ষা করতে গিয়ে তাদেরই রাখা একটি মোবাইল উধাও হয়ে যায়। এরপর তাঁরাও বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। যদিও ভূতের অস্তিত্ব উড়িয়ে দিয়ে কালনা শাখার বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য তাপস কুমার কার্ফা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'অলৌকিক বা ভূত বলে কিছু হয় না। কোনও একটি কারণ নিশ্চয় আছে যার ফলে এই ঘটনা ঘটছে। সঠিক অনুসন্ধান করলেই সেই রহস্যের উদঘাটন হবে।'