বর্ষার মরশুম শুরু হলেও চলতি বছর ইলিশের জোগান কম ছিলই। মৎসজীবীদের আশা ছিল, ভাদ্র মাসে হয়ত মুর্শিদাবাদে গঙ্গায় ইলিশের দেখা মিলবে। কিন্তু তাও দেখা মিলল না। শুধু ইলিশ কেন, সব মাছের ক্ষেত্রেই কমবেশি একই অবস্থা। ফলে হতাশায় এখন অনেক মৎসজীবীরাই নিজেদের পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
কিন্তু কেন গঙ্গায় এই ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না? সেই প্রশ্নের উত্তরে এক মৎসজীবী অভিযোগের সুরেই জানান, যাদের আদি পেশা মাছ ধরা নয়, তারা মশারি জাল দিয়ে মাছ ধরছে। ফলে ইলিশ মাছের চারা থেকে ডিম উঠে আসছে ওই জালে। এর ফলে প্রচুর চারা ও ডিম নষ্ট হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মৎস বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মূলত সচেতনতার অভাবেই ইলিশের দেখা মিলছে না। বাংলাদেশ খুব সুন্দরভাবে বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশে এখন খোকা ইলিশ ধরা পুরোপুরি বন্ধই হয়ে গিয়েছে। খোকা ইলিশ যাতে ধরা না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ প্রশাসন সেনাবাহিনীকেও কাজে লাগায়। এই বিষয়ে খুবই কড়াকড়ি করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা এখনও খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ করতে পারিনি।
মুর্শিদাবাদের গঙ্গায় ইলিশের দেখা না মেলায় এখন অনেক মৎস ব্যবসায়ীরাই সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। এই প্রসঙ্গে ভাগীরথীতে মাছ ধরতে যাওয়া এক মৎসজীবী জানান, ‘ভোর হলেই ভাগীরথীতে মাছ ধরতে বেড়িয়ে পড়ি। সারাদিন ডিঙিতে বসে যা মাছ জালে আসে, তাতে সংসার চলে না।’ তাঁর মতে, শুধু ইলিশ নয়, অনেক মাছই নদীর বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। ভাগীরথীতে মাছ ধরতে যাওয়া অনেকেরই একমত। তাঁদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে পেশা বদল করা ছাড়া উপায় নেই। অনেকেই এখন মাছ ধরার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রি, রঙের মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। মৎসজীবী ফোরামের তরফেও জানানো হয়েছে, এখন নদীতে সব ধরনের মাছই খুব কমে যাচ্ছে। কিন্তু কী কারণে কমে যাচ্ছে, সেটা ঠিক বুঝতে পারছি না।