কেউ নাম সই করতে পারেন না, কেউ এসবের মায়া ত্যাগ করে পরলোকগমন করেছেন কয়েক বছর আগেই। তাঁদের নামেই সিউড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চালু রয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। যা দিয়ে লেনদেন হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গ্রামবাসীদের দাবি, ১০০ দিনের কাজের জন্য জমা দেওয়া নথি ব্যবহার করে খোলা হয়েছে অ্যাকাউন্টগুলি। যার সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্কই নেই।
বৃহস্পতিবার সিউড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে তল্লাশি চালান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেখানে খোঁজ পাওয়া যায় ১৭৭টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের। যার মাধ্যমে ১০ কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। সঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, এই সব অ্যাকাউন্ট খুলতে সই করেছেন এক ব্যক্তিই। সেসব নথি যাচাই না করেই অ্যাকাউন্ট খুলেছে ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবারই ব্যাঙ্ক থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। শুক্রবার বাকি নথি নিয়ে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে নিজাম প্যালেসে হাজির হতে বলা হয়।
যাদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল তাদের খোঁজে নেমে শুক্রবার চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় সাংবাদিকদেরই। হরিহরপুরের বাসিন্দা বৃদ্ধা সুন্দরী বাস্কের বাড়ি গিয়ে খোঁজ পাওয়া যায় তাঁর। বৃদ্ধা জানান, তাঁর নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে জেনে আকাশ থেকে পড়েন তিনি। বৃদ্ধা বলেন, আমি পড়তেই জানি না, সই করব কী করে? অন্য ব্যাঙ্কে আমার যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেখানে টিপছাপ দিই। আর কোনও মোবাইল ফোনও নেই তাঁর।
এখানেই শেষ নয়, ভগীরথ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁর ও তাঁর মৃত ভাইয়ের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কে। তিনি বলেন, ভাই মারা গিয়েছে ৩ বছর হল। স্টেট ব্যাঙ্কে ওর নামে একটা অ্যাকাউন্ট ছিল। সেটা বন্ধ করে দিয়েছি। সমবায় ব্যাঙ্কে যে আমাদের নামে অ্যাকাউন্ট আছে আমরা জানতামই না। ওই অ্যাকাউন্টে আমরা কোনও দিন লেনদেন করিনি। সম্ভবত ১০০ দিনের কাজের জন্য জমা দেওয়া নথি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। স্থানীয় বহু বাসিন্দারই নাম রয়েছে ভুয়ো অ্যাকাউন্টধারীর তালিকায়। তাদের প্রত্যেকের দাবি, অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই তাদের কাছে।