নীলবাতির গাড়িতে করে বাদশাহী মেজাজে ঘুরতেন। নিজেকে আইএএস অফিসার বলে বহু জায়গায় পরিচয় দিতেন। আর এভাবেই দেদার তোলাবাজি করতে বলে এবার অভিযোগ উঠেছে। হলদিয়া থেকে এবার ওই ভুয়ো আইএএস অফিসারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর আপ্ত সহায়ক ছিলেন আগে বলে জানা যাচ্ছে। হলদিয়া থেকে ধৃত ওই ব্যক্তির নাম প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত। এই বিষয়ে এখনও অধীররঞ্জন চৌধুরীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিজেপির বহু নেতাদের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতের বলে অভিযোগ।
এদিকে সুতাহাটা থানার পুলিশ প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতকে গ্রেফতার করে জেরা করতে শুরু করে। তাতেই নাকি হাঁড়ির খবর বেরিয়ে পড়ে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতের বাড়ি সুতাহাটা ব্লকের চৈতন্যপুরে। তাঁর বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান ছিল। একাধিক রাজনৈতিক নেতা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ। বিজেপির প্রথমসারির নেতারা সেখানে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। অনুষ্ঠান চলাকালীনই বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সুতাহাটা থানার পুলিশ। অধীর চৌধুরীর আপ্ত সহায়ক যখন ছিলেন তখন তিনি থাকতেন নয়াদিল্লিতে। এখন অধীরবাবুও প্রাক্তন সাংসদ। তাই ধৃত ব্যক্তি ভুয়ো আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে তোলাবাজি করছিলেন বলে অভিযোগ পুলিশের।
আরও পড়ুন: ‘তিনবার দল বদলেছেন, জামাটা আবার যেন না লাল হয়’, শুভেন্দুকে তুলোধনা মমতার
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, বিজেপির একাধিক বড় নেতাদের সঙ্গেও অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল প্রদীপ্তর। এই ব্যক্তি দিনের পর দিন নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরতেন। প্রদীপ্ত নিজেকে আইএএস অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে তোলা তুলতেন। পুলিশে এই ধরনের নানা অভিযোগ জমা পড়েছিল। নয়াদিল্লিতে থাকার সুবাদে বহু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসার সুযোগে প্রদীপ্ত নিজেকে আইএএস অফিসারের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। সুতাহাটা এলাকায় জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ।
এছাড়া সম্প্রতি চৈতন্যপুরে আয়োজন হয়েছিল ফুটবল টুর্নামেন্ট। সেখানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশেই দেখা গিয়েছিল প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতকে। এমনকী কদিন আগে প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতের গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে আসেন নিশীথ প্রামাণিক বলে অভিযোগ। এই ঘটনাবলীর মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যায় যে বরাবরই বিজেপি নেতাদের আশেপাশেই থাকার চেষ্টা করতেন প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত। এই রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং পরিচিতিকে কৌশলে কাজে লাগিয়েই টাকা রোজগার করতে শুরু করেন প্রদীপ্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর।