পুরুলিয়ায় গিয়ে ফের একবার কয়লা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি নিয়ে ‘ভাইপো’-র বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা টেট কেলেঙ্কারির অভিযোগ অস্বীকার করলেন তিনি। বললেন, টাকা যেত কলকাতায়।
এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘পুরুলিয়া আর বাঁকুড়ায় কয়লা পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও পাথরের খাদান আছে। তাই তোলাবাজ ভাইপোর দৃষ্টি এদিকে পড়ল। তিনি ২০১৫ সালের পর পুরুলিয়া আর বাঁকুড়ার দায়িত্ব নিলেন। এখানে অনুপ মাঝি লালার নেতৃত্বে কীভাবে খনিজ সম্পদ লুঠ হয়েছে আপনারা জানেন’।
এর পর বিনয় মিশ্র প্রসঙ্গে তৃণমূলকে বেঁধেন শুভেন্দু। বলেন, ‘পুরুলিয়ায় যারা রাজনীতি করেন তারা জানেন বিনয় মিশ্র কে। সামনে পিছনে পুলিশের গাড়ি নিয়ে ঘুরতো। জয় বিশ্বাস, আকাশ মাঘারিয়ার মতো পুলিশ সুপাররা তাঁকে স্যালুট করতেন। তাঁর ৬ জন নিরাপত্তারক্ষী ছিল। পুরুলিয়া শহরে থ্রি স্টার আকাশ হোটেলে তিনি থাকতেন। আর তৃণমূল কংগ্রেসের বয়ষ্ক নেতাদের ডেকে কান ধরে উঠবস করাতেন’।
প্রাথমিকে নিয়োগে তাঁর বিরুদ্ধে যে তোলাবাজির অভিযোগ করেছে তৃণমূল, তা খণ্ডন করে শুভেন্দু বলেন, ‘বামফ্রন্টের আমলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তৈরি হয়েছিল। সেই সংসদের মাধ্যমে জেলার ছেলেরা জেলায় চাকরি পেতেন। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে সেই কাউন্সিলের বিলোপ ঘটিয়েছে। ব্রাত্যবসু যতদিন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ততদিন কাউন্সিল ছিল। ২০১৩ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী হয়ে সেই কাউন্সিলগুলির বিলোপ ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। তাই পুরুলিয়া জেলায় বাইরের জেলার লোকেরা এসে শিক্ষকতা করেন’।
শুভেন্দুর দাবি, ‘পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুরে পতি বলে একজন লোক আছে। নাম বলছি না, মানহানির মামলা হতে পারে। তিনি মাল তোলেন। চাকরি পিছু ১০ – ১২ লক্ষ। আরেকজনকে জনরোষে পিটিয়ে মেরে দিয়েছিল। ভগবানপুর পূর্ব মেদিনীপুরের মিস্টার প্রধান। সেই দুজন ছিল তোলাবাজ। চাকরির কনট্রাক্টর। তারা চাকরির কন্ট্র্যাক্ট করে কলকাতায় বস্তা পৌঁছে দিয়েছে আর কলকাতা থেকে তোলাবাজ ভাইপোর কোম্পানি এখানে নিয়োগ করে পাঠিয়ে দিয়েছে। এতে শুভেন্দু অধিকারীর কোনও হাত নেই’।
এদিনও শুভেন্দু তৃণমূল সরকারকে দক্ষিণ কলকাতার সরকার বলে কটাক্ষ করেন। বলেন, দক্ষিণ কলকাতায় বসে জেলার মানুষকে শোষণ করছেন তৃণমূল নেতারা। সঙ্গে তাঁর দাবি, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ায় ৯টি আসনেই জিতবে বিজেপি।