বছর ঘুরতেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। জেলায় জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। এই আবহে সামান্য এক সমবায় ভোটে রক্ত ঝরেছে নন্দীগ্রামে। তৃণমূল বিজেপির সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মী ও সমর্থক। এই আবহে জখম হওয়া দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে গেলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। জখম ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে তৃণমূলকে 'শান্তি বাহিনী' বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু শনিবার বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা শান্তি বাহিনী আছে। যেখানে শান্তি বাহিনী থাকবে সেখানে অশান্তি হবে। ওখানে ৬টা গ্রামে ভোট হয়েছে। চারটি গ্রামে কোনও অশান্তি হয়নি। আর দুটি গ্রামে অশান্তি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র ভেটুরিয়া বুথ থেকে ৭০০ ভোট লিড পেয়েছিলেন, সেখানেই অশান্তি হয়েছে। কোমরে ডান্ডা না ফেলতে পারলে শান্তি বাহিনীকে জব্দ করা যাবে না।'
শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করার পর শুভেন্দু ফের একবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় অশান্তি ছড়াতে পারে। শুভেন্দু বলেন, 'এই জন্যই তো বিজেপি হাইকোর্টে গিয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে ও কোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষক দিয়ে নির্বাচন করতে হবে, সেই আবেদন নিয়ে।'
উল্লেখ্য, শুক্রবার নন্দীগ্রামের ভেকটুয়া সমবায় সমিতির নির্বাচন ছিল। সে নির্বাচনকে ঘিরেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি ও তৃণমূল। ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বাঁশ, লাঠি দিয়ে একে অপরের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। বিজেপি ও তৃণমূল একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে এই নিয়ে। বিজেপির অভিযোগ, তাদের এক কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের হামলার ফলে তৃণমূলের ৩ কর্মী জখম হয়েছেন। যার মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। আরও অভিযোগ, সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী থাকলেও বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। এদিকে সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন করা হয়। লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এর আগেও নন্দীগ্রামে একটি সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছিল। সেই ভোটে ১২ টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করেছিল ১১ টি এবং তৃণমূল পেয়েছিল মাত্র একটি আসন। সেখানেও একে অন্যের বিরুদ্ধে অশান্তির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি এবং তৃণমূল।