ঝাড়গ্রামে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ছাত্রধর মাহাতো তাঁকে জঙ্গলমহল চিনিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেই দাবির বিরোধিতা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, তিনি জঙ্গলমহল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনিয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি, যদি ছত্রধর মাহাতো ‘তাঁর লোক’ হয় তবে কিষাণজিও ‘তাঁর লোক’। তাই জানেশ্বরী হত্যাকাণ্ডের দায়ও তাঁকে নিতে হবে।
শনিবার শালবনির পিড়াকাটার সভা থেকে মমতাকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, ‘ছত্রধর মাহাতো যদি আপনার লোক হয় তবে কিষেণজিও আপনার লোক। তা হলে জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডেরও (ট্রেন দুর্ঘটনা) দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যকে নিতে হবে।’
আরও পড়ুন। 'রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম রাজনীতি করছে', সাধুর নাম করে বিস্ফোরক মমতা
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যকে মানতে নারাজ। তাদের দাবি, ছত্রধর জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী বলেন, ‘জ্ঞানেশ্বরী দায়ের কোনও প্রশ্নই নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘনার পর ছুটে এসেছিলেন। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন।’
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, জঙ্গলমহলকে তিনিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘আপনি জঙ্গলমহল চিনতেন না। ২০১১ সাল, ৭ জানুয়ারি, সকাল ১০টা ১৫। আমি লালগড়ের নেতাইয়ে গিয়ে দেহ কুড়িয়েছিলাম। আপনি কোথায় ছিলেন তখন? পরের দিন এসেছিলেন সাজানো বাগানে ফুল তুলতে।’
শুভেন্দুর দাবি, জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে উঠিয়েই দিয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতো। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘ছত্রধরবাবু ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছিল তৃণমূলের। নাম দিয়েছিল জনসাধারণের কমিটি। আপনার (মমতার) দলটা উঠে গিয়েছিল এখানে।’
তৃণমূলের দাবি, ছত্রধর মাহাতো কোনও দিন তৃণমূল ছাড়েনি। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের সময় তৃণমূলের সঙ্গেই ছিলেন তিনি। এর পাশাপাশি তিনি একটি অরাজনৈতিক গণসংগঠন তৈরি করেছিলেন।
আরও পড়ুন। 'অনেক বাড়বে', বাংলার সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, ভোটের মাঝে ডিএ নিয়ে ঘোষণা মমতার
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রশংসা
এদিন মমতাকে নিশানা করতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রশংসা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন. ‘সুকুমার হাঁসদার (চিকিৎসক বিধায়ক) কথা মনে আছে? ২০১১ সাল। আড়াই বছর চাকরি বাকি ছিল। সুকুমার হাঁসদার পদত্যাগপত্র বুদ্ধবাবু পাঁচ মিনিটের মধ্যে গ্রহণ করেছিলেন।’
শুক্রবার মমতা বলেছিলেন, চাইলে তিনি বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু পদত্যাগপত্র আটকে দিতে পারতেন। প্রসঙ্গত, প্রণত টুডু সরকারি চিকিৎসক ছিলেন। পদত্যাগ করে তিনি পদ্মপ্রার্থী হন। এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘হাই কোর্টে প্রণত আবেদন করেছিলেন। হাই কোর্ট কান মুলে পদত্যাগ গ্রহণে বাধ্য করিয়েছে।’
সেফটিপিন লাগানো নিয়ে কটাক্ষ
ঝাড়গ্রামে সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় হঠাৎ চটি ছিঁড়ে যায় মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জতোয় সেফটিপিন লাগিয়ে আবার বলতে শুরু করেন। শুভেন্দু তাকে কটাক্ষ করেছেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘সেফটিপিন তো আপনার পায়ে ফুটেছে নন্দীগ্রামে। ১,৯৫৬ ভোটে । সেই সেফটিপিন কোনও দিন বেরোবে না।’