এবার একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। আগে হাজরা মোড়ের সভা থেকে দিলীপ ঘোষের নাম না করে বলেছিলেন, মর্নিং ওয়াকে গিয়ে প্রেস বিবৃতি দিই না। সেখানে আজ বললেন, দিলীপ ঘোষ আমার নেতা। আবার আসানসোলে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনজন পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। তাতে রাজ্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এদিন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন।
আগে কী বলেছিলেন শুভেন্দু? হাজরা মোড়ের সভা থেকে শুভেন্দু নাম না করে দিলীপের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতিতে গিমিকে বিশ্বাস করি না। মর্নিং ওয়াকে গিয়ে মিডিয়াতে স্টেটমেন্ট করা আমার অভ্যাস নয়।’ পাল্টা দিলীপ বলেছেন, ‘আরে মর্নিং ওয়াক করতে দম লাগে। সকাল সকাল উঠতে হয়।’ রাজ্য–রাজনীতিতে এই মন্তব্য নিয়েই দলের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে।
আজ কী বললেন শুভেন্দু? আজ, বৃহস্পতিবার শিল্পনগরী হলদিয়ায় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সতীশ সামন্তর ১২৩ জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘নন্দীগ্রামে আমাকে জেতানোর পিছনে দিলীপদার পূর্ণ সহযোগিতা ছিল। উনি আমার দলের নেতা। আমার নেতা। আমি আজ পর্যন্ত যা মন্তব্য করেছি, সবই তৃণমূল প্রাইভেট কোম্পানির চাকর বাকরদের বিরুদ্ধে। আমার দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে কখনও কোনও কথা বলিনি৷ সবটাই মিডিয়ার সাজানো।’ আর আসানসোলের পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ছিল। সিভিক ভলেন্টিয়ার, পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবকরা থাকলে হয়ত হতো না। ছোট জায়গায় অনেক লোক হয়ে গিয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করব। পানিহাটির ইসকন মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে ৫ জন ইসকন ভক্ত মারা গিয়েছিলেন। সে দিন তো আমরা কোনও প্রশ্ন করিনি। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতে নেই।’
কুণালকে কী বলে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু? এখন পূর্ব মেদিনীপুরে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন কুণাল ঘোষ। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। আজ তাঁকে শুভেন্দু আক্রমণ করে বলেন, ‘হলদিয়ায় একটা লোক এসেছে। সাড়ে তিন বছরের জেল খাটা আসামী। ওর সম্পর্কে সেদিন বলেছিলাম। সেটার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি অত্যন্ত ডিসিপ্লিন মেনে চলি। স্কুল জীবন থেকেই এই শৃঙ্খলা আমার আছে। আজ ৫২ বছর পূর্ণ হল। এই বয়সের পর কোনও মানুষের বিশেষ পরিবর্তন হয় না। মিথ্যে কথাও আমি বলি না।’ তবে হঠাৎ শুভেন্দুর এই ভোলবদলে বেশ অবাক সকলে। এই ভোলবদলের নেপথ্যে রয়েছে আরএসএস–এর কড়া দাওয়াই। তারপরই ঘুরে গেলেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।