কথা দিয়েছিলেন ১৯ নভেম্বর সব বলবেন তিনি। তাই গুঞ্জন থেকে শুরু করে জল্পনার অন্ত ছিল না। এই কথা বলার পর সবাই অপেক্ষা করেছিলেন তাহলে বোধহয় এবার নতুন কিছু শোনা যাবে। ভিড় হয়েছিল রামনগরের সভায় নতুন কিছু শোনার জন্য। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটে গেল অন্য এক সমীকরণ। যার জন্য নতুন কিছু শুনতে পেলেন না কেউ। আসলে শুভেন্দুও সময় দিয়েছিলেন দলকে যদি সম্পর্ক মেরামত করতে তারা এগিয়ে আসেন।
সূত্রের খবর, দল সময় পেয়ে যোগাযোগ করল। দুই সাংসদ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সৌগত রায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর দায়িত্ব পড়ে শুভেন্দুকে ঘরে ফিরিয়ে আনার। তিনি যে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতে আছেন তাও সংবাদমাধ্যমের কাছে সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলে দিয়ে বার্তা দিয়ে দেন শুভেন্দুকে। ভাইফোঁটার সন্ধ্যায় গোপনে বৈঠক হয় শুভেন্দুর সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদের। সেখানেই মান বাঙানো হয় তাঁর। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় না হলেও যুক্তির পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন সকলেই। অবশেষে আসে মীমাংসার রাস্তা। শুভেন্দুকে বলা হয় রামনগরের সভা থেকে তেমন বার্তাই দিতে। তারপর বাকিটা তাঁরা দেখে নেবেন।
কথা অনুযায়ী, রামনগরের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়াননি, আর আমিও দল ছাড়িনি।’ সাংসদদের দেওয়া কথা তিনি রাখলেন বটে। কিন্তু মানুষকে দেওয়া কথা তিনি রাখলেন না। রামনগরের মঞ্চ থেকে সব বলার কথা ছিল তাঁর। অর্থাৎ রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা। সেই কথা তিনি রাখলেন না। বিজেপিও ওৎ পেতে বসে ছিল শুভেন্দুকে বরণ করার জন্য। কিন্তু তাও হল না। তবে যদি দেখা যায় সাংসদরা তাঁর দাবি মতো কাজ করতে পারলেন না তাহলে আবার পুরনো রাস্তায় তিনি হাঁটবেন। বরং শুভেন্দুর বলেছেন, ‘এই মঞ্চে আমি রাজনৈতিক কথা বলব বলে মনে করেছিলেন অনেকে। তাঁদের ছড়ানো খবরের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। আমি নেব না।’
তাঁরই কথা ছিল, আমি প্যারাশুটে উঠিনি, লিফটে নামিনি। বরং সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে উপরে উঠেছি। তিনিই বলেছিলেন, মানুষ পুরনো ইতিহাস ভুলে যান। একদিন তাঁদেরকেই হাতে ধরে এখানে নিয়ে এসেছিলাম। আর তিনিই বললেন, একদিন-দুদিনের লোক নই তো, বসন্তের কোকিল নই আমি। সবার সঙ্গে আমার আত্মিক পরিচয় রয়েছে। এই মন্তব্য করার পরই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বলেছেন তা শুনে আমি খুশি। ওঁর সঙ্গে আমার যখন কথা হয়, উনি দল ছাড়বেন এমন কোনও কথা বলেননি। উনে দলে আছেন, দলে থাকলে আমরা সবাই খুশি হব।’
তাহলে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তৃণমূলেই থাকছেন তিনি? এই বিষয়ে অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী এখন জল মাপছেন। তৃণমূল ওকে দলে রাখার জন্য হাতে পায়ে ধরছে। তৃণমূল নেতারা ওঁর কাছে যাচ্ছেন। শুভেন্দু হয়তো সব দিক দেখতে চাইছে। দিদিমণিকে অধিকারীদের কাছে গিয়ে হাতপায়ে ধরতে হবে।’