ইয়াস এবং ভরা কোটালের জেরে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে কুলতলি। নদীর বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে পড়েছে স্থলভাগে। শুধু কুলতলি নয়, সুন্দরবনের গোপালগঞ্জ, মৈপীঠ, বৈকুন্ঠপুর, গুড়গুড়িয়া, ভুবনেশ্বরী, দেউলবাড়িদেবীপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে অথবা নদী বাঁধ উপচে মাতলা ও ঠাকুরান নদীর জলে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মূলত কৃষি নির্ভর এই এলাকার অর্থনীতি ভেঙে পড়ার জোগাড় হয়েছে। মাথায় হাত কৃষক ও মৎস্যজীবীদের। ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সমুদ্রের থেকে বয়ে আসা নদীর নোনা জল ঢুকে চাষের জমি, পুকুর, খাল, বিল ভরতি হয়ে গিয়েছে। ফলে, চাষের জমির যেমন ক্ষতি হয়েছে, অন্য দিকে পুকুর ও খালের মিষ্টি জলের মধ্যে নোনা জল মিশে গিয়েছে। ফলে, সমুদ্রের নোনা জলে পুকুরের মিষ্টি জলের মাছ মরে পড়ে আছে এখানে-ওখানে।
রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, ভেটকির মতো মাছ কাদায় আটকা আছে। মরে পড়ে আছে মুরগি, ছাগল, গরুও। এতে সমস্ত পুকুর ও খালের আশেপাশের এলাকাগুলো দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকায়। একে জলভাসি ঘর-সংসার। চাষের জমিও জলের তলায়। ভাঙা ঘরে এখন সাপের বসতি। পুকুরের মিষ্টি জলে মিশে গিয়েছে সাগরের নোনা জল। যা ব্যবহারের অযোগ্য।
তবু তার মধ্যেই ফের উঠে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা কুলতলিবাসীর। ইতিমধ্যেই পাম্পের সাহায্যে নোনা জল বের করতে উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে সমস্ত চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকে গিয়েছে, যতটা সম্ভব সেই জমা জল পাম্পের মাধ্যমে বের করতে হবে। বাকিটায় ‘নোনা স্বর্ণ’ ধানের চাষ হবে। একই ভাবে নোনা জলে চাষ করা হবে ‘স্বর্ণ মৎস্য’ও। কিন্তু সে তো ভবিষ্যতের ব্যাপার আগে যে মাছগুলি পচেছে সেগুলির ব্যবস্থা করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে।