ট্যাবের জন্য রাজ্য সরকারের বরাদ্দ টাকা চলে যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে। এই অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বহু জেলা থেকেই। এই আবহে তদন্তও শুরু হয়েছে। সেই তদন্তে নেমেই সম্প্রতি মালদর দুই স্কুলে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সেই দুই স্কুলের একটি ছিল হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর স্কুল। আর সেখানে স্কুলের অফিসঘরের আলমারির নীচ থেকে বেরিয়ে এল মদের বোতল। যা দেখে হতবাক তদন্তকারী অফিসাররা। আর এই আবহে চাঁচোলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পুলিশ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে তদন্ত। ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরী। (আরও পড়ুন: ৩-৪ দিনে নামতে পারে পারদ, বলছে রিপোর্ট, শীত নিয়ে বড় আপডেট IMD প্রধানের)
রিপোর্ট অনুযায়ী, চাঁচোলের মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ ও শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা গিয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর স্কুলে। সেখানে গিয়েই তদন্তকারীরা দেখেন, অফিস ঘরে আলমারির নীচে রয়েছে সারি সারি মদের বোতল। এই আবহে চাঁচোলের মহকুমা শাসক বলেন, 'স্কুলে মদের বোতল কীভাবে এল, সেই বিষয়ে পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।'
উল্লেখ্য, যোগ্য পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে না গিয়ে ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে বহু জেলাতেই। এই আবহে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একাদশ, দ্বাদশের পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় রাজ্যে সরকারের তরফে। এর জন্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের তালিকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ রাজ্যে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। সেই অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় সরকার। তাই কীভাবে এক অ্যাকাউন্টের জায়গায় অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা গেল, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই নিয়ে গত ৭ নভেম্বর শিক্ষা দফতরের সচিবকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ট্যাবের টাকা যোগ্য পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে না গিয়ে অন্যত্র যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয় শিক্ষা সচিবের থেকে। উল্লেখ্য, ক'দিন আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪টি স্কুলে অভিযোগ ওঠে, সেখানকার অনেকেই ট্যাবের টাকা পাননি। তদন্তে নেমে জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা জানতে পারেন, ওই ৪টি স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মোট ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর হ্যাক করে টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এরফলে ফলে সরকার ট্যাবের টাকা পাঠালেও প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে তা চলে গিয়েছে। এই আবহে যে সব স্কুলের পড়ুয়ারা এই সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দিষ্ট থানায় গিয়ে এফআইআর অথবা জেনারেল ডায়েরি করতে বলা হয়। সেই এফআইআর বা জিডির প্রতিলিপি জেলা স্কুল পরিদর্শকে দ্রুত পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।