সাম্প্রতিক সময়ে নদীতে মাছের ডিম মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। যার ফলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নদীতে কমছে। বিশেষ করে রুই, কাতলা, মৃগেলের মতো অতি পরিচিত মাছের সংখ্যা মারাত্মকভাবে নদীতে হ্রাস পাচ্ছে। তারফলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনিই মৎস্যজীবীরা আর্থিকভাবে সমস্যার মুখে পড়ছেন। এই অবস্থায় নদীতে মাছের সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে ভাগীরথীতে ছাড়া হল কয়েক লক্ষ মাছের চারা। মুর্শিদাবাদ থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে ভাগীরথী নদীতে এই সমস্ত মাছের চারা ছাড়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপনারায়ণের জলে বিষ মিশিয়ে মাছ ধরার অভিযোগ, পানীয় জল নিয়ে আতঙ্কে স্থানীয়রা
মূলত চারা মাছ ছাড়া হয়েছে আইসিএআর এবং সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বারাকপুর) উদ্যোগে। জলশক্তি মন্ত্রকের অধীনে জাতীয় মিশনের জন্য গঙ্গা এবং জাতীয় নদী রেঞ্জিং প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ভাগীরথীতে মাছ ছাড়া হয়েছে। বুধবার মুর্শিদাবাদের লালবাগ থেকে চারা মাছ ছাড়া হয়। এই উদ্দেশ্যে এখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল গঙ্গায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংরক্ষণ এবং গঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার করা। এর ফলে ভাগীরথীতে মাছের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছে প্রশাসন।
জানা যাচ্ছে, এদিন লালবাগে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল তাতে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার মহকুমা শাসক বনমালী রায়। তিনি জানিয়েছেন, দু লক্ষেরও বেশি চারা মাছ নদীতে ছাড়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ বছর ধরেই এইভাবে ওই সংস্থার তরফে নদীতে চারা মাছ ছাড়া হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কিছু অসাধু মৎস্যজীবীরা ছোট চারা মাছগুলিকে ধরে ফেলেন। তার ফলে মাছের সংখ্যা সেভাবে বৃদ্ধি পায় না। তাই এবার এই বিষয়টি দেখে বিশেষভাবে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মহাকুমা শাসক।
তিনি বলেন, যাতে কেউ অসাধু উপায় মাছের চারা ধরতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি মাছ চাষিদের সতর্ক করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, এদিন প্রায় ৩ লক্ষ মাছ ছাড়া হয়েছে। তবে আইসিএআরের পরিকল্পনা রয়েছে, ৬০ লক্ষ চারা মাছ ছাড়ার।বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই চারা মাছ শুধু মাছের সংখ্যা বাড়ায় তাই নয়, নানা জলজ আগাছা, পোকামাকড়কে খেয়ে ফেলে নদীকে পরিষ্কার করে এবং বংশবৃদ্ধির ফলে মৎস্যজীবীদের আয়ের সুযোগও বাড়ে।