সোমবার সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর প্রথম ডাউন ট্রেন চলল রাঙাপানি স্টেশন দিয়ে। মঙ্গলবার সকালে কামাখ্যা-গান্ধিধাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথম রাঙাপানি স্টেশন পার করে।
এদিন সকালে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে রেলকর্মীরা অবিরাম কাজ করেছেন। অনেক পরিশ্রম করে রেল লাইনের ওপর থেকে যাবতীয় বাধা সরিয়েছেন তাঁরা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় আপ লাইনকে ডিজেল ইঞ্জিন চলাচলের জন্য ফিট ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটায় ডাউন লাইনকেও ফিট ঘোষণা করা হয়েছে। সেখান দিয়ে ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে টানা ট্রেন চলবে। ডাউন লাইনে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎবাহী তারের সংযোগ ঠিক করে দেওয়া হবে। তার পর ওই লাইন দিয়েও ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন চলতে পারবে।’
সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দার্জিলিং জেলার নিজবাড়ি ও চটের হাট স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে একটি কন্টেনারবাহী মালগাড়ি। সংঘর্ষের অভিঘাতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের শেষ কামরাটি মালগাড়ির ইঞ্জিনের ওপরে উঠে যায়। তার আগের দুটি কামরা ছিটকে পড়ে রেল লাইন থেকে। এই দুর্ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৫০ জন। কিন্তু কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা।
আরও পড়ুন - রাত ৩টে ২০-তে শিয়ালদার ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছল ‘অভিশপ্ত’ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস
পড়তে থাকুন - 'মানুষকে ট্রেন ছেড়ে সাইকেল নিতে হয়…'কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা, তোপ মমতার
রেলের তরফে দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়, মালগাড়ির চালকদের গাফিলতিতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বেলা বাড়লে বদলে যায় দুর্ঘটনার তত্ত্ব। জানা যায়, সোমবার সকাল ৫.৩০ মিনিট থেকে রাঙাপানি স্টেশনের অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ ছিল। সেখানে পেপার সিগন্যালে ট্রেন চলছিল। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার পেপার সিগন্যাল দিচ্ছিলেন ট্রেনের চালকদের। সেই পেপার সিগন্যালের ভিত্তিতে ৯টি লাল সিগন্যাল অতিক্রম করার অধিকার দেওয়া হচ্ছিল চালকদের। তবে ট্রেনের গতিবেগ ওই অংশে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটারের বেশি থাকতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা ছিল পেপার সিগন্যালে।
আরও পড়ুন - 'মৃত্যুর মুখে! ছিটকে পড়লাম, ট্রেনে চাপতে ভয় লাগছে,' HT Bangla-তে জানালেন কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী
দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্ পর জানা যায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির দুটি ট্রেনের চালকের কাছেই পেপার সিগন্যাল ছিল। প্রশ্ন উঠছে, কেন পর পর ২টি ট্রেনকে পেপার সিগন্যাল দিলেন রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার। আর পেপার সিগন্যাল নিয়ে কেন প্রবল গতিতে ট্রেন ছোটালেন মালগাড়ির চালক? কারণ মালগাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার দুর্ঘটনার অভিঘাত এত বড় হওয়ার কথা নয়। এই দুর্ঘটনার জেরে রেল দুর্ঘটনা এড়াতে ‘কবচ’ প্রযুক্তি কার্যকর করা ও দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে LHB কোচ ব্যবহারের দাবি উঠেছে।