প্রায় এক বছর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৯ জনের। সেই ঘটনার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। বেআইনি বাজি কারখানা রুখতে একের পর এক পদক্ষেপ করেছিল রাজ্য সরকার। তারপরেও ফের পূর্ব মেদিনীপুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। তবে এবার ঘটনাস্থল হল কোলাঘাট। কোলাঘাট থানার পয়াগ গ্রামে বাজি কারখানায় মজুত থাকা বাজিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তারফলে আস্ত একটি বাড়ি উড়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও একটি বাড়ি। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন এক বৃদ্ধা। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
আরও পড়ুন: গড়ে তোলা হবে আতসবাজি ক্লাস্টার, বেআইনি কারখানার শ্রমিকদেরও কাজ মিলবে
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত্রি ১০ টা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকের অন্তর্গত পয়াগ গ্রামে প্রথমে একটি বেআইনি বাজি কারখানায় আগুন লাগে। তারপরেই রাত ১০ নাগাদ ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে পয়াগ গ্রামের বেশ কিছু পরিবার বেআইনি বাজির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। গতকাল আনন্দ মাইতি এক বাসিন্দার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে। তারফলে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ উড়ে গিয়েছে। পাশের আরও একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কোলাঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ও দমকলের দুটি ইঞ্জিন। তারা ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই বাজি কারখানার বিস্ফোরণে কত জন আহত হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জানা যাচ্ছে, পার্শ্ববর্তী এক বাড়ির বৃদ্ধা জখম হয়েছেন । তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরেই পুরো এলাকার ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বিস্ফরণের তীব্রতা এতোটাই ছিল যে কয়েককিলোমিটার দূর থেকে শব্দ শোনা গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই কার্যত জনশূন্য রয়েছে গ্রামটি।
এ বিষয়ে এসইউসিআইয়ের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘এই গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনি বাজি তৈরি হয়ে থাকে। গ্রামের বহু মানুষ এই বেআইনি বাজি কারখানার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ যাতে ব্যবস্থা নেয় সেবিষয়ে আবেদন জানিয়েছি আমরা।’ তাঁর অভিযোগ, যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে তখন পুলিশ সক্রিয় থাকে। তবে অন্যান্য সময় পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করে বেআইনি বাজির কারখানা এখানে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এখানে আশেপাশের কম বেশি অনেকেই বেআইনি বাজি কারখানার সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকের বাড়িতে তল্লাশি করলেই কিছু না কিছু বেআইনি বাজি পাওয়া যেতে পারে। তাই ঘটনার পর থেকে তারা ঘরছাড়া রয়েছেন। গ্রামবাসীরা যাতে সবুজ বাজি তৈরিতে উদ্যোগী হয় সেবিষয়ে প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি।