বেআইনি নির্মাণ বা জবরদখল নিয়ে বরাবরই কড়া মনোভাব দেখিয়ে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এবার কলকাতা হাইকোর্টের জমিই জবরদখল হয়ে গেল। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের জন্য স্থায়ী ভবনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। সেখানেই কলকাতা হাইকোর্টের জমি দখল করে বেশ কিছু পরিবার বসতি স্থাপন করেছে। এই অবস্থায় জবরদখলকারীদের দ্রুত জমি খালি করার নির্দেশ দিল প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা কড়া নির্দেশ দিয়ে পরিবারগুলিকে জানিয়েছে ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের জায়গা ফাঁকা না করা হলে বুলডোজার চালানো হবে।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়েই পদক্ষেপ, পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে ভাঙা হল বেআইনি নির্মাণ
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। মাস খানেক আগে স্থায়ী ভবন নির্মাণের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিচারপতিরা। সেখানে তাঁদের নজরে আসে কয়েকজন হাইকোর্টে জমির দখল করে বসতি স্থাপন করেছেন। তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতিরা। একই সঙ্গে অবৈধভাবে বসবাস করার জন্য এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের কাছ থেকে সেই নির্দেশ পাওয়ার পরে জেলা প্রশাসনের তরফে পরিবারগুলিকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, এর জন্য নোটিশ দেওয়া হয় পরিবারগুলিকে।
জানা যায়, সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের কাজ খতিয়ে দেখতে ফের সেখানে যান হাইকোর্টের বিচারপতিরা। তখন তাঁরা দেখেন, হাইকোর্টের জমি অবৈধভাবে দখল করে এখনও সেই পরিবারগুলি রয়েছে। সেখানে ৭টি পরিবার রয়েছে। এরপরে বিচারপতিরা অবিলম্বে সেই জায়গা খালি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরে বুধবার জলপাইগুড়ি সদর বিডিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছয়। সেখানে পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করতে গেলে তারা নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা জানান। তবে প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, এটা হাইকোর্টের জায়গা। তাই এখানে অবৈধভাবে থাকা যাবে না। এখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিবারগুলিকে ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আর তা না হলে বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা জানতেন না যে এটা হাইকোর্টের জায়গা। এর আগেও তারা নোটিশ পেয়েছিলেন। তারপরে বিভিন্ন দফতরে পুনর্বাসনের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও দফতর থেকে সাড়া পাননি। তাদের আর কোথাও থাকার জায়গা নেই। এভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হলে তারা বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাবেন? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।