চাপের মুখেও জমি ছাড়তে নারাজ একদা ভাঙড়ের সর্বেসর্বা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। ঘর দখল হয়ে যাওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে খোলা আকাশের নীচে বসে মানুষকে পরিষেবা দিলেন তিনি। আরাবুলের এই কাজকে ‘নাটক’ বলছে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। তবে তাতে কান দিতে নারাজ জেল ফেরত আরাবুল।
আইএসএফ নেতা খুনের মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে লোকসভা ভোটের আগে গ্রেফতার হন আরাবুল। চার মাস জেলবন্দি ছিলেন তিনি। জেলমুক্তি হলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পঞ্চায়েত সমিতিতে যেতে পারেননি ভাঙড় ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। গত ২ ডিসেম্বর থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার আরাবুলকে পঞ্চায়েত সমিতিতে যাওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। আর তার পরই প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূলের কোন্দল।
আরাবুল পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে গিয়ে দেখেন, দখল হয়ে গিয়েছে তাঁর ঘর। ঘর দখল করে বসে আছেন বন ও ভূমি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ খইরুল ইসলাম। সেদিন থেকে নিয়ম করে সোম ও বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত সমিতিতে গিয়ে বিডিওর ঘরে বসে থাকতেন আরাবুল। বৃহস্পতিবারও সকাল ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিডিও অফিসে পৌঁছে তেমনই বিডিওর ঘরে বসেছিলেন তিনি। তখনই ঘরে ঢোকেন খইরুল। বিডিওকে তিনি বলেন, এভাবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিডিওর ঘরে বসে থাকায় সাধারণ মানুষের পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে। তখন বিডিওর ঘর থেকে বেরিয়ে বিডিও অফিস চত্বরেই চেয়ার টেবিল পেতে বসে পড়েন আরাবুল। সঙ্গে ছিলনে ছেলে হাকিমুল। সেখানে বসেই সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনেন তিনি। আয়ের প্রমাণপত্রসহ বিভিন্ন নথিতে সই করেন। দেন রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট।
আরাবুল বলেন, ‘দলের নির্দেশে আমি পঞ্চায়েত সমিতিতে এসেছি। মানুষকে পরিষেবা দেওয়া আমার কাজ। বিডিও সাহেব তিন তলায় আমার জন্য একটা ঘর বরাদ্দ করেছেন। কিন্তু প্রবীণ নাগরিকদের অত ওপরে গিয়ে কথা বলার শক্তি নেই। তাই বিডিও অফিসের সামনে বসেই পরিষেবা দিচ্ছি।’
ওদিকে খইরুল ইসলাম বলেন, ‘এসব নাটকবাজি করে লাভ নেই। খুনি, তোলাবাজকে ভাঙড়ের মানুষ আর মেনে নেবে না।’