তাঁদের আদরের পুলু আর নেই, ভাবতেই পারছেন না কৃষ্ণনগরের সোনাপট্টির মানুষজন। তাঁরা জানতেন ‘ফাইট’ করে ঠিকই ফিরবেন পর্দার ‘ক্ষিদদা’ বাস্তবের সৌমিত্র। কিন্তু ঝাপসা চোখে এদিন তাঁকে চিরবিদায় জানালেন তাঁর কাছের বন্ধু এবং আত্মীয়রা।
বাংলাদেশ থেকে আসার পর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পিতামহ পরিবার নিয়ে বাস করতে শুরু করেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। এখানেই সোনাপট্টির বাড়িতে জন্ম হয় সৌমিত্রর। পাড়ার লোকজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবরা তাঁকে ডাকতেন পুলু নামে, রবিবার ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’কে বলছিলেন সৌমিত্রবাবুর ছেলেবেলার খেলার সঙ্গী সন্ধ্যা মজুমদার।
সন্ধ্যাদেবীর কথায়, কৃষ্ণনগরের সিএমএসটি জন্স হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন সৌমিত্র ও তাঁর ভাইয়েরা। তার পর তাঁরা সোনাপট্টির ওই বাড়ি বিক্রি করে কলকাতায় চলে যান। সে বাড়িতেই আজ গড়ে উঠেছে এক সিপিএম কার্যালয়। বন্ধু পুলুর সঙ্গে ১৫ বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল সন্ধ্যাদেবীর। তিনি জানান, সাদা ভাত, ডাল আর সঙ্গে মাছ ভাজা— ভীষণ প্রিয় ছিল সৌমিত্রর। ওই হালকা পদে খুঁজে পেতেন তৃপ্তি। কোনও কাজে এদিকে এলে চলে আসতেন তাঁর বাড়িতে। রান্না করে ছেলেবেলার বন্ধুকে প্রিয় খাবার খাওয়াতেন সন্ধ্যাদেবী। তিনি বলছিলেন, ‘এই সব কিছু শূন্য করে আজ চলে গেলেন সৌমিত্র, এই শূন্যতা কী করে মেনে নেব?’
সোনাপট্টির বাসিন্দারা বলছিলেন, কয়েক বছর আগে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন সৌমিত্র। কিন্তু তখন অসুস্থ থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বান্ধবী সন্ধ্যা। তবে সৌমিত্রবাবু তাঁর খোঁজ নিতে ভেলোননি। সোনাপট্টির কী হাল? সেই খবরও নিয়েছিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা পাড়ার ছেলে পুলু। সেই পাড়ায় আজ বড্ড শূন্যতা, দীপাবলির এত আলোর মধ্যে একরাশ অন্ধকার ঢেলে দিয়ে গেলেন সৌমিত্র।