উত্তর ২৪ পরগনার জাগুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অশিক্ষক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করল পুলিশ। পরীক্ষা চলাকালীন পড়ুয়াদের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে পড়ুয়ারা লাঠি, বাঁশ নিয়ে চড়াও হয়। তাতেই প্রাণ যায় স্কুলের অশিক্ষক কর্মী শিবু শী’র (৬৮)। স্কুলে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। সেই সময়ে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার স্কুলের পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয় এবং শিবুর ছবিতে মাল্যদান করা হয়।
আরও পড়ুন: স্কুলের ক্যাম্পাসেই জলে ডুবে মৃত্যু ছাত্রের, পরিবারের অভিযোগে ধৃত মালিক
এদিন স্কুল পরিদর্শন করেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। তিনি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গেও কথা বলেন। প্রধান শিক্ষক মানবেন্দ্র মণ্ডল জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি জানিয়েছে ওই বৃদ্ধার পরিবার। প্রধান শিক্ষক জানান, এই ঘটনার সঠিকভাবে তদন্ত হওয়া উচিত। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিবুর পরিবারের পাশে রয়েছে। এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর জানান, পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ বিষয়ে আরই বিস্তারিত জানা যাবে।
কী ঘটেছিল?
জানা যায়, পরীক্ষার সময় মোবাইল নিষিদ্ধ করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার জন্য আগেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তা সত্বেও কয়েকজন পড়ুয়া স্কুলে মোবাইল নিয়ে চলে আসে। পরীক্ষা চলাকালীন সেই ফোন বাজেয়াপ্ত করেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেছিলেন, পরীক্ষা শেষ হলে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের নিয়ে আসতে হবে। তারপরে তাদের মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে। স্কুলের তরফে জানানো হয় বিকেল তিনটের মধ্যে অভিভাবকদের নিয়ে আসতে হবে। সেই মতো পরীক্ষা শেষে কয়েকজন পড়ুয়া অভিভাবকদের নিয়ে মোবাইল নিয়ে যায়। তারপরেও ১৫ টি মোবাইল ছিল।
এরপর প্রধান শিক্ষক বেরিয়ে যাওয়ায় ঘরে তালা লাগিয়ে দেন অস্থায়ী কর্মী। তখন কয়জন পড়ুয়া তাঁকে প্রধান শিক্ষকের ঘর খুলে মোবাইল ফেরত দিতে বলে। কিন্তু তিনি অস্বীকার করায় তাঁর উপর চড়াও হয় এবং তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করে পড়ুয়ারা। তার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিবু। কোনওমতে বেরিয়ে সেখান থেকে একটি চায়ের দোকানে যান তিনি। সেখান থেকে তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের এমন কাণ্ডে সমালোচনা সরব হয়েছে বিশিষ্ট মহল। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।