দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের কাছে রুটি রুজির অন্যতম অবলম্বন এই চা চাষ। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে দ্বিতীয় ফ্লাশের চায়ের উৎপাদন।
খামখেয়ালি আবহাওয়া। রাতে বৃষ্টি আর দিনভর মেঘলা। আর তার জেরে এবার বড় সংকটের মুখে চা উৎপাদন। চায়ের মূলত সেকেন্ড ফ্লাশে এবার বড় প্রভাব পড়তে চলেছে।
উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা উৎপাদকদের সংগঠনের (CISTA) সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, ১৫ দিন হল বৃষ্টি সেভাবে হচ্ছে না। মেঘলা আবহাওয়া। লুপারের আক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে।। চা পাতার দাম পাচ্ছি না। আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত। গোটা মরসুম এখনও পড়ে রয়েছে। কী হবে বুঝতে পারছি না। এনিয়ে আমরা টি বোর্ডকে চিঠি দিচ্ছি।
চা উৎপাদকদের দাবি, আমরা আতঙ্কিত। এবার হয়তো দাম না পেয়ে চা পাতা ফেলে দিতে হবে।
সূত্রের খবর, চলতি মরসুমে প্রথম ফ্লাশের চায়ের উৎপাদন মার খেয়েছিল। এরপর সাধারণত এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় ফ্লাশের পাতা চলে আসে। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরে দ্বিতীয় ফ্লাশের চায়ের উৎপাদনে বড় প্রভাব পড়ছে। বেশিরভাগ সময় রাতের দিকে বৃষ্টি হচ্ছে। আর সকালের দিকে রোদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে এই আবহাওয়া চা চাষের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। দিনের বেলার রোদ না হলে রোগ পোকার আক্রমণ বাড়তে থাকে। আর হয়েছেও সেটাই।
একদিকে লাল মাকড়সা ও অন্যদিকে লুপারের আক্রমণ। এদিকে অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে সাধারণত কীটনাশক প্রয়োগ করে রোগ পোকার আক্রমণ প্রতিহত করা যায়। কিন্তু চায়ের ক্ষেত্রে এটা কিছুটা আলাদা। কারণ রোগ পোকার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করলে চায়ের গুণগত মান নেমে যায়। এর জেরে প্রভাব পড়ে রফতানিতে। যার মাসুল গুনতে হয় চা ব্যবসায়ীদের। চা পাতার যে বিশেষ সুগন্ধি তা মার খায়।
মূলত ডুয়ার্সের বাগানের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে আখেরে চা চাষের ক্ষেত্রে বড় একটা লাভ হবে না। পাশাপাশি কিছুক্ষেত্রে ঝড়েও চা গাছের ক্ষতি হচ্ছে। তাপমাত্রার খামখেয়ালিপনার জেরে চা পাতার গুণগত মান কমে যাচ্ছে।
চা উৎপাদকদের মতে, চা পাতার দাম মিলছে না। উৎপাদন খরচও উঠছে না। ভয়াবহ পরিস্থিতি। হাজার হাজার মানুষ এই চা উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।