রাজ্যে পোল্ট্রি মুরগির দাম এক লাফে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। কারণটা, ঝাড়খণ্ডের বার্ড ফ্লু। এই বার্ড ফ্লুর সঙ্গে মুরগির দাম কমার সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও প্ররোক্ষ যোগ রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে বার্ড ফ্লুয়ের জন্য গত ৬ মার্চ থেকে অসম সরকার পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে পোল্টি মুরগি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর ফলে বাংলায় পোল্ট্রি মুরগি বিক্রতাদের মাথা হাত পড়েছে। এক টানা ৬ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অসম সীমান্ত দিয়ে মুরগি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ছেন বাংলার ব্যবসায়ীরা। সে কারণে তাঁরা কম দামে মুরগি রাজ্যের বাজারেই বেচে দিচ্ছেন।
গত ২০ ফেব্রয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার জানায় ঝাড়খণ্ডে অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িছে। এর পরই অসম সরকার নির্দেশিকা জারি করে পোল্ট্রি মুরগি চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সচিব, মদনমোহন মাইতি এই নিষেধাজ্ঞাকে 'বেআইনি' বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন,'এই ধরনের ক্ষেত্রে ভারত সরকারে স্ট্যাডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অনুযায়ী ১০ দিনের বেশি সীমান্ত বন্ধ রাখা যায় না। যে ভাবে অসম সরকার ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত বন্ধ করে রেখেছে তা সম্পর্ণ বেআইনি।'
অসমে সীমান্ত বন্ধের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উত্তরবঙ্গের মুরগি ব্যবসায়ীরা। কারণ উত্তরবঙ্গ থেকেই বেশি মুরগি অসম এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সরবরাহ করা হয়। সূত্রের খবর এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি টাকারও বেশি খবরচ হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের মুখ্য সচিব বিবেক কুমার অসমের পশুপালন ও পশুচিকিৎসা বিভাগের প্রধান সচিবকে চিঠি লিখেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করার জন্য। সূত্রের খবর, এখনও অসম সরকারের থেকে কোনও উত্তর আসেনি।
প্রসঙ্গত, শুধু অসম নয়, সে রাজ্যের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মুরগি সরবরাহ করে বাংলা। তা না হওয়া শঙ্কার মুখে বাংলার পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা।
তবে মুরগির দাম ১০০টাকার কাছাকাছি কমে যাওয়ায় খুশির ছোঁয়া লেগেছে ক্রেতাদের মনে। কারণ, যেখানে শাক-সবজির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সেখানে মাংসের দাম এক লাফে এতটা কমে যাওয়া তাঁদের আশাতীত। তবে কিছুটা শঙ্কার রয়েছে তাঁদের মনে। অধীপ রায় নামে এক স্কুল শিক্ষকের কথায়,'দাম কমেছে ভালো কথা। কিন্তু কেনার সময় মনের মধ্যে ভয়ও একটা কাজ করছে।'