শাসকদলের নেতা। পদ মাহাত্ম্যও বিশেষ নেই। কিন্তু সেই ছোট নেতার গাড়িতেই বিরাট বোর্ড। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে একাধিক গাড়িতে দেখা যাচ্ছে এই ধরনের বোর্ড। তবে যেটা তাৎপর্যপূর্ণ সেটা হল ওই নেতা যে পদে রয়েছেন যেমন তিনি সভাপতি সেটা বড় হরফে লেখা রয়েছে বোর্ডে। কিন্তু তার নীচে একেবারে ছোট হরফে লেখা রয়েছে তিনি ঠিক কোন স্তরের নেতা।
যেমন হয়তো কোনও নেতা বুথ সভাপতি। আর তাঁর গাড়ির বোর্ডে লেখা থাকছে বিরাট হরফে সভাপতি। দেখা গেল সেই গাড়ির বোর্ডে বুথ কথাটা একেবারে ছোট ছোট হরফে।
তবে শুধু বুথ সভাপতিই নয়, অঞ্চল সভাপতির গাড়ির বোর্ডেও একই স্টাইল। সভাপতি শব্দটা একেবারে পেল্লায় সাইজের। আর অঞ্চল বা বুথ শব্দটা একেবারে ছোট হরফে। কার্যত সেই বোর্ড দেখে অনেক সময় বোঝাই যায় না যে তিনি ঠিক কীসের সভাপতি। কোন স্তরের সভাপতি।
কিন্তু কেন এমন বোর্ড ব্যবহার করছেন দলের নীচুতলার নেতারা? আসলে সবটাই ক্ষমতার আস্ফালন। ক্ষমতা দেখানোর প্রতিযোগিতা। ডোমকল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হাজিকুল ইসলামের গাড়িতেও এমন ধরনের বোর্ড রয়েছে বলে খবর।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, গোটাটাই লোক দেখানো। বলা ভালো দাপট দেখানোর জন্য়ই এই ধরনের বোর্ড লাগানো হয়। তিনি কতটা ক্ষমতাশালী সেটা প্রমাণ করার জন্যই এই প্রতিযোগিতা চলছে একাধিক জেলায়। কারণ বহু কষ্টে, অনেককে টপকে তিনি এই পদ পেয়েছেন। সেটাই জাহির করছেন তিনি।
এদিকে বিরোধী নেতারাও এনিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। তবে এই বোর্ডকে ঘিরে তৃণমূলের একাংশও কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে কেবলমাত্র ছোট নেতারাই যে একমাত্র এই ধরনের বোর্ড ব্যবহার করছেন তেমনটা নয়। একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিধায়করাও তাঁদের গাড়ির সামনে পেছনে বিরাট করে লিখে রাখছেন এমএলএ শব্দটা। আবার অন্যদিকও রয়েছে। দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রীর গাড়ির বোর্ডে বিরাট করে কিছু লেখা থাকে না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মূলত যে নেতাদের জনপ্রিয়তা বেশি, দাপট দেখানোর আলাদা করে প্রয়োজন হয় না, তাঁরা এই গাড়ির বোর্ডের উপর বিশেষ নজর দেন না। কিন্তু যাঁদের গ্রামের মানুষের উপর দাপট দেখানোর বেশি প্রয়োজন, বহু কষ্ট করে, অনেককে টপকে তবে বুথ সভাপতি হতে পেরেছেন তাঁর কাছে সভাপতি পদটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণে গাড়িতে বড় করে লিখছেন প্রেসিডেন্ট, কিন্তু সেটা যে বুথের সেটা যাতে বিশেষ চোখে পড়ে না তার জন্য়ই তার হরফ একেবারে ছোট্ট ছোট্ট।