এপার বাংলায় ওপার বাংলা থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা যেন আর থামছেই না। আবারও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দু'টি ঘটনায় মোট তিনজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে একজন তো রীতিমতো 'করিৎকর্মা'। বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও সেই ব্যক্তি এপারে জাঁকিয়ে বসার ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছিলেন! ছিল মহাকুম্ভে ডুব দেওয়ার মনস্কামনাও!
যাঁর কথা বলা হচ্ছে, তাঁকে পাকড়াও করেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার পুলিশ। সূত্রের দাবি, হাবড়া স্টেশন মোড় এলাকা থেকে বাংলাদেশের ওই নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু, তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় পুলিশের!
প্রাথমিক তদন্তে উঠ এসেছে, ওই অনুপ্রবেশকারী নাকি 'ধর্মকর্ম' করতেই এবার এদেশে পদার্পণ করেছিলেন। এবং সেটাও বৈধভাবে। বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে রীতিমতো পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে ভারতে ঢোকেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল, প্রয়াগরাজ যাবেন। মহাকুম্ভের মেলায় গিয়ে পুণ্যস্নান সারবেন। এত দূর পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। গোল বাঁধল অন্য জায়গায়।
পুলিশের দাবি, ওই বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট যেমন পাওয়া গিয়েছে, তেমনই তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভারতীয় আধার কার্ড! শুধু নিজের জন্য নয়, পরিবারের সকলের জন্যই ভারতীয় আধার কার্ড তৈরি করিয়েছিলেন তিনি। যার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল ভুয়ো নথি এবং ভুল তথ্য!
এখানেই শেষ নয়। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, গত কয়েকমাস ধরেই বারবার এদেশে এসেছেন ওই বাংলাদেশি। এবং এই কয়েক মাসের মধ্যেই নিজের জন্য, পরিবারের বাকিদের জন্য বিভিন্ন জাল ভারতীয় নথি তৈরি করিয়েছেন। এমনকী, ভারতের নাগরিক হিসাবেই ভারতীয় ভূখণ্ডে জমিও কিনেছেন তিনি! এর থেকেই পুলিশের অনুমান, ভবিষ্যতে হয়তো পরিচয় ভাঁড়িয়ে গোটা পরিবার নিয়েই ভারতে বেআইনিভাবে বসবাসের ছক কষেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর কাছ থেকে তাঁর নামে ভারতীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে!
পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার নেপথ্যে কোনও চক্র কাজ করছে। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সেই বিষয়ে খোঁজখবর করার এবং দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
অন্যদিকে, চোরা পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত যেতে গিয়ে আর শেষ রক্ষা হল না দুই অনুপ্রবেশকারীর। সীমান্তে টহলরত বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়ে গেলেন দু'জনই। মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনাও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আংরাইল এলাকা থেকে ওই দুই বাংলাদেশিকে পাকড়াও করে বিএসএফ। পরে তাঁদের স্থানীয় গাইঘাটা থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃত দুই যুবকের নাম - বিলাল শেখ ও সোহেল রানা। তাঁরা বাংলাদেশের যশোর জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।