বনকর্মী, আধিকারিকরা গত কয়েকদিন ধরে একেবারে দিনরাত এক করে পড়ে রয়েছেন। নানা কায়দা করে বাঘিনীকে বাগে আনার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তার দেখা নেই। গলায় পরানো রেডিও কলার দিয়ে তার গতিবিধির প্রতি নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই টোপ গিলছে না বাঘিনী।
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকার জঙ্গলে বাঘিনী রয়েছে বলে খবর। তাকে ধরার জন্য় ফাঁদও পাতা হয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই সেই বাঘিনীকে জালে পোরা যাচ্ছে না।
এর আগে ওই বাঘিনী জঙ্গলে চরতে যাওয়া ছাগলে পেট ভরিয়েছিল বলে খবর। কিন্তু রোজই যে সে জঙ্গলে চরতে যাওয়া ছাগলে পেট ভরাচ্ছে তেমনটা নয়। আবার টোপের ধারে কাছে আসছে না। সেক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে বাঘিনী তার নাগালের মধ্যে এমন কিছু জন্তুকে পেয়ে যাচ্ছে যেটা শিকার করে সে পেট ভরিয়ে ফেলছে। সেকারণে বাঘিনী টোপের ধারে কাছে আসছে না। ট্র্যাপ ক্যামেরাতেও তেমন কিছু ধরা পড়ছে না।
তবে বনদফতরের আরও একটা আশঙ্কার বিষয় হল যদি লোকালয়ে বাঘিনী ঢুকে পড়ে তাহলে আরও বিপদ। সেকারণে জঙ্গল যেখানে শেষ হচ্ছে সেই সমস্ত এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এবার বাঁকুড়া থেকে হুলা পার্টি নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের উপর মূল দায়িত্ব হল বাঘিনী যাতে লোকালয়ে ঢুকে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করা।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে এই বাঘিনীকে বাগে আনতে কার্যত নাকানিচোবানি খাচ্ছে বনদফতর। সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের পরে এবার পুরুলিয়ার মানবাজারে বাঘিনী গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। ঝারা পাহাড় থেকে ডাঙরডিতে সরে গিয়েছে বাঘিনী জিনাত। মানবাজার ২ নম্বর ব্লকে ওই বাঘিনী তার নতুন ডেরা বানাচ্ছে বলে খবর।
রাজ্য সড়কের পাশে পাথরজল গ্রামের আলুর জমিতে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে বলে খবর। তারপরই এলাকায় ব্যপক আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ, বনদফতর, প্রশাসনের লোকজন স্থানীয় অন্তত পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে। সন্ধ্যার পরে কেউ যাতে এলাকায় বেরিয়ে না পড়ে সেব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। রেডিও কলারের মাধ্যমে বাঘিনীর অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত দেখা হচ্ছে ওই বাঘিনী যেন লোকালয়ে ঢুকে পড়তে না পারে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, ওড়িশার সিমলিপালে জিনাতকে আনা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের অন্ধেরি-তাবোড়ার জঙ্গল থেকে। সিমলিপালের জঙ্গলের টাইগার রিজার্ভে মন বসেনি জিনাতের। ১৫০ কিলোমিটারের রাস্তা পার করে সে মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া জঙ্গলে আসে। এরপর ঝাড়গ্রাম হয়ে পুরুলিয়া।