কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও প্রধান জীবন সিংহের হুমকি ভিডিও প্রকাশের পর উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হল। সম্প্রতি জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার সফরে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সফর চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার যাতে কোনও খামতি না হয়, সেই ব্যবস্থাই রাখল প্রশাসন।
উত্তরবঙ্গ সফরের মুখে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ হুমকি দিয়েছিলেন, ‘ভারতভূক্তির চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারকে ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত রাজ্য হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোচ কামতাপুরের ওপরে কোনও সাংবিধানিক অধিকার থাকে না। কোচবিহারের মানুষ বৃহত্তর কামতাপুর রাজ্য গঠন করবে। এখানকার মানুষ তার নিজের ভাগ্য নিজেরাই ঠিক করবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, কোচ কামতাপুরে পা দেবেন না। এই মাটির ওপরে আমাদের অধিকার আগে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি তার অধিকার কামতাপুরের ওপরে চাপিয়ে দেয় তাহলে তার পরিণাম ভয়ঙ্কর হবে। বহুদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শাসন সহ্য করে আসছি। আর নয়। পশ্চিমবঙ্গের দেওয়া উন্নয়নের থেকে পৃথক রাজ্য অনেক ভাল। কামতাপুরের মানুষদের কাছে আমার অনুরোধ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিথ্যে উন্নয়নের কথায় ভুলে যাবেন না। খাল কেটে কুমির আনবেন না। আমরা মাথা নত করতে শিখিনি। এই কোচ কামতাপুর থেকে বহিরাগত পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে উৎখাত করব।’ এই হুমকি ভিডিও সত্বেও উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বভাবতই তাঁর এই সফরকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই উভয় কর্মসূচিকে ঘিরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ভিডিও–তে দেখা গিয়েছে জীবন সিংহ সেনার পোশাক পড়ে বক্তব্য রাখছেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছে কেএলও জঙ্গিরা। তবে ভিডিওটি ঠিক কোথায় তোলা হয়েছে, সেটা অবশ্য বোঝা যাচ্ছে না।
তবে পুলিশের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর উত্তরবঙ্গে যথন বিজেপির আধিপত্য বাড়ে, তখন থেকেই কেএলও জঙ্গি প্রধানের তরফ থেকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে হুমকি বার্তা আসতে থাকে।সম্প্রতি জীবন সিংহের যে ভিডিও বার্তা সামনে এসেছে, তাতে সাংসদ জন বার্লার পাশাপাশি দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জয়ন্ত রায়ের নামও রয়েছে। তাঁরা যে পৃথক রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করছে সেকথাও বলা আছে।