কোচবিহারের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বহু মানুষের বাড়ি। সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব আবাস যোজনায় তাদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, আবাসের তালিকা প্রকাশিত হতেই দেখা যায় তাতে নাম নেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের। তাই নিয়ে দলের নেতৃত্বকেই দায়ী করে এবং দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে একের পর এক দল থেকে পদত্যাগ করলেন কোচবিহারের এক নম্বর ব্লকের সুকটাবাড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের ২১ জন সদস্য। সেইসঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির ৩ সদস্যও পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই অবস্থায় পদত্যাগী পঞ্চায়েত সদস্যরা বিরোধী দলে যোগ দেবেন কি না তাই নিয়ে জোরচর্চা শুরু হয়েছে কোচবিহারের রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন: ‘প্রকল্পের টাকা দেয় না অথচ কেন্দ্রীয় টিম পাঠায়’, বিজেপিকে তোপ মমতার
লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে এবার ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরেও আবাসের ঘর পাইয়ে না দেওয়ায় মূলত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ২১ জন পঞ্চায়েত সদস্য। জানা যায়, সুকটাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা ২০২২ সালে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল। তারফলে ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। সেই সময় পঞ্চায়েত সদস্যরা তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আবাস যোজনা তাদের ঘর দেওয়া হবে। কিন্তু আবাসের তালিকা প্রকাশ হতে দেখা যায় তাদের নাম নেই। এই নিয়ে দলের বিরুদ্ধে খুব উগরে দিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যরা।
তৃণমুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম এসেছিল ৭৫০ জনের। তবে বাংলা আবাস যোজনায় দেখা যায় ৪৪০ জনের নাম এসেছে। এই নিয়ে দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। তাদের বক্তব্য, দলের নেতাদের গাফিলতির কারণে যোগ্যদের নাম নেই আবাসের তালিকায়। সদস্যদের দাবি, ঝড়ে যাদের ঘর ভেঙেছে তারা ঘর না পাওয়া পর্যন্ত অন্যরাও একটিও ঘর নেবেন না। এই দাবিতে ইতিমধ্যেই সদস্যরা জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। যদিও অন্য দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন পদত্যাগী সদস্যরা। তারা নির্দল হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারে বিজেপি। তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানিয়েছেন, তিনি এখনও পর্যন্ত পদত্যাগপত্র পাননি। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে না।