আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। চিকিৎসক ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষরা রাস্তা নেমে মিছিল করেছেন। পিছিয়ে নেই খুদেরাও। এরই মধ্যে বহু স্কুল থেকেও মিছিল করা হয়েছে এই ইস্যুতে। তবে এমনই এক মিছিলে নাকি বলপ্রয়োগ করে তা থামানোর চেষ্টা করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আরজি করের দোষীদের শাস্তির দাবিতে মিছিলে নেমেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুরের গোমুন্ডা সুবার্বন হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা। সেখানে তারপর পথ অবরোধ করেন প্রতিবাদীরা। আর তখনই নাকি প্রতিাদীদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৭ তারিখ। ঘটনাটির ভিডিয়ো ভাইরাল হলেই উঠেছে বিতর্কের ঝড়। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। (আরও পড়ুন: আরজি কর ইস্যুতে ২ স্কুলের মিছিলে 'না' পুলিশের, চিঠি সুপ্রিম ও হাই কোর্টে)
অভিযোগ, আন্দোলন কর্মসূচি অংশ নেওয়া পড়ুয়াদের রাস্তা অবরোধ তুলতে সেখানে চড়াও হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা চন্দন বেরা এবং তাঁর দলবল। এই চন্দন হলেন মোহনপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য। পেশায় তিনি সরকারি কন্ট্রাক্টর। এদিকে ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন, সেখানে তাহলে শাসকদল জনসাধারণের প্রতিবাদে বাধা সৃষ্টি করছে কেন? এদিকে সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রতিবাদী শিক্ষক এবং অভিভাবকদের ধাক্কা দেওয়া হচ্ছে।
সেই ভিডিয়োতেই একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'বাচ্চাগুলোকে নামিয়েছেন? এদের পথে নামেবেন বলে স্কুল খুলেছেন?' অভিযোগ আঙুল উঁচিয়ে সেই কথাগুলো যিনি বলেছেন, তিনিই চন্দন। যদিও সেই তৃণমূল নেতা পরবর্তীতে দাবি করেন, ভিডিয়োতে তিনি নেই। এই ধরনের কোনও ঘটনাই নাকি ঘটেনি। এদিকে এই বিষয় নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন পণ্ডিত মুখ খুলতে নারাজ।
এদিকে সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হল যে স্কুলের বাইরে কোনওরকম কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না পড়ুয়ারা। শুধুমাত্র স্কুলশিক্ষা দফতরের আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানেই তারা যোগ দিতে পারবে। আর সেই নির্দেশিকা নিয়ে যেমন সমালোচনায় মুখর হয়েছে শিক্ষক মহল, তেমনই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। ওই নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে নাম না করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হীরক রানি’ বলে কটাক্ষ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) ধর্ষণ এবং খুনের প্রেক্ষিতেই সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি। তবে বিরোধীদের দাবি, সেই ইস্যুতে প্রতিবাদ ঠেকাতেই এহেন নির্দেশিকা জারি।