বাগনানে ছাত্রীকে তৃণমূল নেতার শ্লীলতাহানি ও মা-কে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি আক্রান্তের। আক্রান্ত ছাত্রীর দাবি, তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। সরকারি চাকরির টোপ দিচ্ছে তারা। অন্যদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মোটা টাকার প্রস্তাব দিচ্ছেন স্বয়ং বাগনান থানার আইসি। যার জেরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। বাড়ি ছাড়তে চান বলে জানিয়েছেন আক্রান্ত ছাত্রী।
বাগনানের কলেজছাত্রীর দাবি, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য শাসকদল তৃণমূলের তরফে তাঁকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে সরকারি চাকরির টোপ দিচ্ছে তৃণমূল। ওদিকে তাঁকে মামলা প্রত্যাহারেরে জন্য বাগনান থানার আইসি অমরজিৎ বিশ্বাস ২০ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে দাবি ওই ছাত্রীর। প্রস্তাব না মানলে ছাত্রীর বাড়ি থেকে পুলিশি নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হবে বলে তিনি হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর ওপর অ্যাসিড হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ছাত্রীটি। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগায় আপাতত মামাবাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ছাত্রীর অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায়। বাগনান থানার আইসির দাবি, ‘অভিযোগ ভিত্তিহীন’। হাওড়া জেলার তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘ছাত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। নইলে আদালতের দরজা খোলা রয়েছে তাঁর কাছে।’
ওদিকে সোমবার বাগনান থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্যরা। ছাত্রীর নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
বিজেপির দাবি, অভিযুক্তকে বহিষ্কার করে তৃণমূল আই ওয়াশ করতে চেয়েছিল তা ছাত্রীর অভিযোগে স্পষ্ট। আক্রান্তের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে তাঁকে লাগাতার হুমকি দিয়ে চলেছে তারা। এখনো গ্রেফতার হয়নি এক অভিযুক্ত। কতৃত্ব কায়েম করতে তৃণমূল যে কতটা নীচে নামতে পারে এই ঘটনা তার প্রমাণ।
গত মঙ্গলবার রাতে বাগনান থানার গোপালপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ছাদে উঠে কলেজছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন কুশ বেরা নামে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা। সুপারি গাছ বেয়ে ছাদে উঠেছিল সে। ছাত্রীর চিৎকার শুনে তাঁর মা ছাদে এলে তাঁকে ধাক্কা দেয় অভিযুক্ত। এতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। ঘটনার পরদিন কুশ বেরাকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। তবে ছাত্রীর অভিযোগে স্পষ্ট, তৃণমূল আছে তৃণমূলেই।