শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। এবার সেই অঙ্কিতাকে কোচবিহারের জেলা সম্পাদক পদে নিয়ে এল তৃণমূল কংগ্রেস। অর্থাৎ এবার সরাসরি রাজনীতির ময়দানে। অঙ্কিতাকে কোচবিহার জেলা সম্পাদক পদে নিয়ে এসে তাঁর যে আগে ক্ষতি হয়েছিল সেটা পুষিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস বলে মনে করছেন অনেকে। আর এটা নিয়েই এখন জোর চর্চা জেলার রাজনীতিতে। একদা অনেক ঝড়ঝাপটা সহ্য করতে হয়েছিল। এবার সেটা সহ্য করতে হবে না।
তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহারের জেলা সম্পাদক হওয়ায় অঙ্কিতা এখন অনেকটা স্বস্তি বোধ করছেন। এই পদে আসার পিছনে কয়েকটি কারণও আছে। তাঁকে যাঁর নির্দেশে চাকরি খোয়াতে হয়েছিল তিনিই এখন বিজেপির সাংসদ। একদা বিচারপতি ছিলেন। তাই উত্তরবঙ্গের মাটিতে অঙ্কিতাকে জেলা সম্পাদক করে নিয়ে এসে প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বার্তা দিল তৃণমূল কংগ্রেস বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অঙ্কিতা। শীর্ষ নেত়ৃত্বের নির্দেশে তাঁকে জেলা সম্পাদকের পদে নিযুক্ত করা হল।’
আরও পড়ুন: সাতসকালে বাগদার গণনাকেন্দ্রে হাজির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, শান্তনুকে সরিয়ে দিল পুলিশ
এবার কোচবিহারে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেরে যান। নিশীথ প্রামাণিককে হারিয়ে এই উত্তরবঙ্গের মাটিতে ঘাসফুল ফোটানো হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে মেখলিগঞ্জে ভাল ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাতেই খুশি হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। আর তাই অঙ্কিতা অধিকারীকে এবার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হল। মহিলা মুখকে সামনে রেখে এখানে আরও উন্নয়নের কাজ করতে চায় জোড়াফুল শিবির বলে মনে করা হচ্ছে। অঙ্কিতাকে যে জেলা সম্পাদক করা হচ্ছে এদিন তার ঘোষণা করেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। এই দায়িত্ব পেয়ে খুশি অঙ্কিতার বক্তব্য, ‘লোকসভা নির্বাচনে বাবার সঙ্গে দলের প্রচার করেছিলাম। দল আমাকে ভরসা করে সম্পাদকের পদ দিয়েছে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করব।’
তাছাড়া এবার একেবারে নতুন ভূমিকায় পরেশ কন্যাকে দেখা যাবে জেলার রাজনীতির ময়দানে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির কোচবিহারের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর কথায়, ‘কে জানে, এখানেও বাবার সুপারিশ রয়েছে কিনা।’ তবে এসব কটাক্ষ, খোঁচায় কান দিতে নারাজ অঙ্কিতা। আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই কাজ শুরু করতে চান তিনি। ২০২২ সালের মে মাসে রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।