রেশন বণ্টনে রাজ্যে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ কার্যত মেনে নিল রাজ্য সরকার। জাল রেশন কার্ড বানিয়ে কোটি কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বাবাকে ২ কোটি টাকা জরিমানা করল রাজ্য সরকার। মুসলিম অধ্যুষিত ওই এলাকায় লক্ষ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড কাদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি বিজেপির।
আরও পড়ুন - গ্রেফতারির পর হাসপাতালে বসেও রেশন দুর্নীতির টাকার বখরা নিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়: ED
পড়তে থাকুন - বারো বছরের পুরনো ঘটনায় নবদ্বীপে ইসকনের প্রাক্তন আধিকারিককে গ্রেফতার করল পুলিশ
ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরি করে রেশন সামগ্রী আত্মসাতের অভিযোগে আবদুল হাকিম নামে এক রেশন ডিলারকে ২ কোটি ০৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে খাদ্য দফতর। আবদুল হাকিমের ছেলে আখতার আলি তৃণমূলের ফাঁসিদেওয়া ব্লক সভাপতি। মুসলিম অধ্যুষিত সীমান্তবর্তী এলাকায় তিনি লক্ষ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরি করিয়েছেন বলে অভিযোগ। তার পর সেই কার্ডের রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করে বিক্রি করেছেন খোলা বাজারে। এভাবে তিনি কয়েক কোটি টাকা তছরূপ করেছেন বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর। রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড লিংক করতেই ফাঁসিদেওয়া থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়ো আধার কার্ডের সন্ধান পাওয়া যায়। তার তদন্তে নেমে আবদুল হাকিমের খোঁজ পান আধিকারিকরা।
অভিযোগ নিয়ে আখতার আলি বলেন, ‘বাবার ব্যবসা আলাদা। তাই কী হয়েছে বলতে পারব না। তবে আমরা আইনি পথে এর মোকাবিলা করব।’
আরও পড়ুন - স্কুলের মিড - ডে মিলের চাল চুরি করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ল তৃণমূল নেতা
খাদ্য দফতরের এই পদক্ষেপে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, একজন রেশন ডিলারের অধীনে মাত্র কয়েক হাজার গ্রাহক থাকেন। তাহলে একজন নিজের এলাকায় লক্ষ লক্ষ জাল রেশন কার্ড তৈরি করালেন কী করে? সীমান্তবর্তী এলাকায় জাল রেশন কার্ডের এই রকরমা রুখতে কেন ব্যর্থ হল পুলিশ। সীমান্তবর্তী এলাকায় ভুয়ো রেশন কার্ডের এই রমরমা কারবার সামনে আসায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আধার রেশন সংযুক্তিকরণের পর রাজ্যে প্রায় ২ কোটি রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে।
শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ বলেন, ‘হাতে নাতে ধরা পড়ে গিয়ে এখন পিঠ বাঁচাতে তৃণমূল এসব করছে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই বলেছিল রেশন দুর্নীতি হয়েছে। এখন নিজেদের নেতাকে জরিমানা করে খাতায় কলমে সাধু সাজতে চাইছে রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গের রেশন দুর্নীতি নিয়ে আমি ইডিকে বহু চিঠি দিয়েছি। ইডিকে বলব এই রেশন ডিলারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে জানুন লুঠের টাকা কোথায় গিয়েছে। আমি নিশ্চিত সব নদী গিয়ে মিশবে কালীঘাটে।’