দুর্ঘটনায় আহত বৃদ্ধের মৃত্যুর জন্য আবারও একবার জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিকেই কাঠগড়ায় তুলল রাজ্যের শাসকদল। হুগলির হরিপালের এই ঘটনায় 'বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু'র অভিযোগ তুলেছেন মৃতের ছেলেও। বিষয়টি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মিডিয়া সেল।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ভেরিফায়েড সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে যে ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে, তাতে হরিপাল থানার নালিকুল সিনেমাতলা এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত সদানন্দ পালের (৬৩) ছেলের বয়ান রয়েছে। ওই যুবক জানিয়েছেন, বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনার শিকার হন সদানন্দ। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে চুঁচুড়ার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বৃদ্ধকে। সেখানে তাঁর সিটি স্ক্যান করানো হয়। চিকিৎসক জানান, সদানন্দের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। তাই তাঁর আরও ভালো চিকিৎসা দরকার। এর জন্য তাঁকে কল্যাণী এইমসে রেফার করা হয়। কিন্তু, বৃদ্ধের পরিবারকে ফিরিয়ে দেয় এইমস কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালেও সদানন্দকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে। বস্তুত, হুগলি ও নদিয়া জেলার কোনও সরকারি হাসপাতালেই বৃদ্ধকে ভর্তি করানো যায়নি।
এই অবস্থায় জেলা থেকে সরাসরি কলকাতায় চলে আসেন সদানন্দের পরিবারের সদস্যরা। বৃদ্ধকে নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছন তাঁরা। কিন্তু, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলায় সেখানেও তাঁর বাবাকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন সদানন্দের ছেলে। পরবর্তীতে বারাসতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় দুর্ঘটনায় আহত ওই বৃদ্ধকে। ২৯ অগস্ট সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। গোটা বিষয়টি সমাজমাধ্যমে তুলে ধরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকেই দায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই কোন্নগরের বাসিন্দা এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় আর জি কর হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। যার তীব্র বিরোধিতা করেছে আর জি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় তৃণমূল বনাম বিজেপির ভার্চুয়াল যুদ্ধও শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতও। সেই আবহে হরিপালের সদানন্দ পালের মৃত্যু বিতর্কে আরও ইন্ধন জোগাবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।