আশঙ্কাই সত্যি হল। ক্ষমতা বাঁটোয়ারায় ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করেও বনগাঁয় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ রুখতে পারলেন না দলের নেতারা। আক্রান্ত কংগ্রেস প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত থানায় বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান। যাতে নতুন করে অস্বস্তিতে তৃণমূল।
বনগাঁর তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পুর প্রশাসক শংকর আঢ্যকে পুরভোটে টিকিট দেয়নি দল। বদলে টিকিট দিয়েছে তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যকে। ওদিকে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়েন শংকরবাবুর ভাই মলয় আঢ্য ও মেয়ে ঋতুপর্ণা। এর মধ্যে মলয় আঢ্য তৃণমূলের জেলা সভাপতি গোপাল শেঠের কাছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে হারলেও জেতেন ঋতুপর্ণা।
অভিযোগ, কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ায় দোলের দিন মলয়বাবুর বাড়িতে হামলা চালায় গোপাল শেঠের অনুগামীরা। মলয়বাবুর সমর্থনে প্রচার করেছেন এমন বেশ কয়েকটি ক্লাবেও হামলা চালায় তারা। মেয়েদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় শহরে।
ঘটনার পর কংগ্রেসের পরাজিত প্রার্থী মলয়বাবুকে সঙ্গে নিয়ে বনগাঁ থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলের উপ পুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্য। তাঁর অভিযোগ, পুরপ্রধান গোপাল শেঠের লোকজন মলয়বাবুর ওপর আক্রমণ চালিয়েছেন। এক সময় থানার ভিতরে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এমনকী পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতিও হয়। দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ।
এই নিয়ে গোপাল শেঠ বলেন, ‘কংগ্রেস প্রার্থীকে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে যাওয়ার আগে ভাইস চেয়ারম্যানের আমার সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। আমি বিষয়টা দলকে জানিয়েছি।’
ওদিকে জেলা বিজেপির নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘তৃণমূলের একাংশ কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। যার জেরে শহরে গোলমাল হচ্ছে। মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। আর মার খাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।’
বলে রাখি, বনগাঁয় তৃণমূলের রাজনীতির দুই মেরুতে রয়েছেন গোপাল শেঠ ও শংকর আঢ্য। শহরে শংকর আঢ্যের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ রয়েছে। পুরভোট দখলে রাখার জন্য কাউন্সিলর অপহরণের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এহেন শংকর আঢ্যকে এবার টিকিট দেয়নি তৃণমূল। বনগাঁ পুরসভা দখলের পর জেলা তৃণমূল সভাপতি গোপাল শেঠকে পুরপ্রধান করেছে তারা। আর উপ পুরপ্রধান করেছে শংকরবাবুর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যকে। তাতেও বোর্ড গঠনের পর তেরাত্তির পেরোতে না পেরোতে শুরু সংঘর্ষ।