ভোটের মুখে যতই দলের অন্দরে স্বচ্ছতা ও সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরতে চেষ্টা করছে তৃণমূল ততই বেরিয়ে পড়ছে গোষ্ঠীদ্বন্দের চরম চেহারা। দলের একটি গোষ্ঠী কাঠগড়ায় তুলছে অপরপক্ষকে। আর তা থেকে কখনো তৈরি হচ্ছে উত্তেজনা। নেতাদের সামনেও ফেটে পড়ছে সেই ক্ষোভ। বৃহস্পতিবার যেমনটা হল বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডলের সামনে ব্লক সভাপতি সাবের আলি মণ্ডলের বিরুদ্ধে বলতে শুরু করায় মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয় তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির। এর পরই তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায় দুপক্ষের মধ্যে।
এদিন সাঁইথিয়া ব্লকে ছিল ছিল তৃণমূলের বুথভিত্তিক কর্মী সম্মেলন। সেখনে ১৪৪ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি শান্ত মণ্ডল অভিযোগ করেন ব্লক সভাপতি সাবের আলি মণ্ডলের জন্য লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হয়েছে তৃণমূলের। সাবের আলি মণ্ডলের রাজনৈতিক অবস্থানের স্থিরতা নেই। তিনি যখন খুশি নিজের অবস্থান বদল করেন। যার ফলে তাঁর সঙ্গে রাজনীতি করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
দলের নেতাকে বেসুরো শুনে অনুব্রত মণ্ডল তাঁকে বলেন, আপনাকে এখানে এসব কথা বলতে বারণ করেছিলাম। এখানে সংবাদমাধ্যম রয়েছে। এসব কথা প্রকাশ্যে বললে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। সঙ্গে সঙ্গে শান্ত মণ্ডলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন সাবের আলি মণ্ডলের সমর্থকরা। তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে সভাস্থল থেকে বার করে দেন তাঁরা। পালটা সাবেরের অনুগামীদের ওপর আক্রমণ শানায় বুথ সভাপতির সমর্থকরাও। চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সভাস্থলে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দলীয় বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের রীতি ভূভারতে কোথাও নেই। কারণ, দলীয় বৈঠকে এক নেতা অন্য নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারেন। তা দলের পক্ষে মোটেও শুভ নয়। কিন্তু বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের কর্মিসভা লাগাতার ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করছে তৃণমূল। দলের ঐক্য ও স্বচ্ছতা প্রমাণে মরিয়া তৃণমূলের এই চেষ্টা প্রায় রোজই ফিরছে বুমেরাং হয়ে।