গৃহবধূকে মারধর করার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন স্বামী। তার জেরে স্বামীকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে নির্যাতিতার পরিবারকে ক্রমাগত খুন ও গণধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা। বাঁকুড়ার ইন্দাসের এমন ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলেরও। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী হওয়াতেই এমন আচরণ দাবী নির্যাতিতার।
বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকায় গত ৩ নভেম্বর ঘটনার সূত্রপাত। জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যায় অসুস্থ কাকাশ্বশুরকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক গৃহবধূ। সে সময় গ্রামে চলছিল কালী বিসর্জন। মত্ত অবস্থায় কয়েকজন যুবক গৃহবধূর কাকাশ্বশুরকে রঙ মাখাতে গেলে বাধা দেন গৃহবধূ। আর তাতেই গৃহবধূর উপর চড়াও হয় প্রদীপ রায়সহ কয়েকজন। অভিযোগ ওই গৃহবধূকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পাশাপাশি তাঁকে মারধর করে তারা। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে নির্যাতিতা শ্লীলতাহানীর কথা উল্লেখ না করলেও নির্যাতিতার দাবী সে সময় তাঁর শ্লীলতাহানিও করা হয়েছিল। কোনওক্রমে যুবকদের হাত ছাড়িয়ে কাকাশ্বশুরকে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে গোটা ঘটনার কথা নিজের স্বামীকে জানান ওই গৃহবধূ।
এরপরই গৃহবধূর স্বামী ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকেও প্রদীপ রায়সহ চার জন বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। এই সময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে ফের স্বামীর সামনেই গৃহবধূকে আরেক প্রস্থ শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই নির্যাতিতা ও তাঁর স্বামী ইন্দাস থানায় হাজির হয়ে প্রদীপ রায়সহ চার জনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর প্রদীপ রায় সহ অভিযুক্তরা ওই দম্পতিকে খুন ও নির্যাতিতাকে তুলে নিতে বলে গণধর্ষণের হুমকি দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
এতেই আতঙ্কিত হয়ে আজ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। পুলিশ সুপার তাঁদের অভিযোগ শুনে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আস্বাস দেন তাঁদের। নির্যাতিতা ও তাঁর স্বামীর দাবি, মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায় একজন তৃণমূল কর্মী। তাই হয়তো এত মারাত্মক অভিযোগ দায়েরের পরও অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন কোনো রাজনৈতিক রং না দেখে দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি শেখ হামিদ জানিয়েছেন, বিজেপির চারদিকে রাজনীতি খোঁজা অভ্যাস তবে এর সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। এটি কালীপুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ঘটেছে এবং এই বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে পুলিশ নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেবে তিনি আশাবাদী।
অন্যদিকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির যুব সভাপতি কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যেখানেই দেখবেন ধর্ষণ শ্লীলতাহানি খুন হচ্ছে আর সেখানেই তোলামূলের নাম জড়াচ্ছে। তার উপর এই ঘটনায় তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে।