ধর্মীয় বিভাজনের বীজ কি রাজ্যে বপন হয়েছে ছাত্রমনেও। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের করা এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বীরভূমের এক স্কুলে ছাত্রকে জয় শ্রী রাম বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, অন্য ধর্মের ছাত্রদের তাদের ধর্মীয় স্লোগান দিতে বাধা না দেওয়া হলেও হিন্দু ছাত্রদের জয় শ্রী রাম বলতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নবীনবরণ অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্ররা ধর্মীয় স্লোগান দিল কেন? তবে কি পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে?
আরও পড়ুন - বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় বিহার থেকে গ্রেফতার ৩
পড়তে থাকুন - কলকাতায় ফের মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু, ৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ
ঘটনা সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের পুরন্দরপুর হাই স্কুলের। সেখানে গত বুধবার প্রথা মেনে একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে লাইন দিয়ে নিজেদের নাম বলতে হয় নবাগত ছাত্রছাত্রীদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্ররা জানিয়েছে, প্রথমে কয়েকজন ছাত্র ‘সালাম আলাইকুম’ বলে নিজের পরিচয় দেয়। এর পর ছাত্ররা ‘রাম রাম’ বলে নিজের পরিচয় দিতে থাকে। এরই মধ্যে আকাশ দাস নামে এক ছাত্র ‘জয় শ্রী রাম’ বলে নিজের পরিচয় দেয়। তা শুনে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা হই হই করে ওঠে। এর পর ওই স্কুলে সহকারী শিক্ষক তথা তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা অভিজিৎ নন্দন ছাত্রদের কাছ থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে বলেন, সবাই নমস্কার বলে নিজের নাম বলো, অন্য কিছু বলবে না।
বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এটা একটা হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমরা বুঝতে পারছি না, পশ্চিমবঙ্গে আছি না পশ্চিম বাংলাদেশে আছি। সেদিন ছাত্ররা রাম রাম ও জয় শ্রী রাম ধ্বনী দিয়ে নিজের পরিচয় দিচ্ছিল। তখন স্কুলের একজন শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা, যিনি বকলমে স্কুলটি পরিচালনা করেন, তিনি বলেন, ছাত্রদের রাম রাম ধ্বনী দেওয়া যাবে না। তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে জয় শ্রী রাম বা রাম রাম ধ্বনী বলতে দেবে না? স্কুলে এভাবে ধর্মীয় ভাবে পরিচয় দেওয়া হয় না। কিন্তু ওখানে অন্য সম্প্রদায়ের ছাত্ররা প্রথমে তাদের ধর্মীয় স্লোগান দিচ্ছিল। তখন কিন্তু স্কুলের কোনও শিক্ষক বাধা দেয়নি। স্কুলে কেন ওই বিভাজনের রাজনীতি? এ কি দুধেল গাইদের লাথি খাওয়ার তত্ত্ব?’
আরও পড়ুন - ভোট পরবর্তী হিংসার নামে ভুয়ো মামলা দায়ের, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করল হাইকোর্ট
অভিযুক্ত শিক্ষক অভিজিৎ নন্দন বলেন, ‘প্রথমে কিছু ছাত্র উঠে ‘সালাম আলাইকুম’ বলে শুরু করল। তার পর কিছু ছাত্র উঠে রাম রাম বলতে শুরু করল। ঠিক আছে, নো প্রবলেম। হঠাৎ করে একটা ছেলে দেখছি জয় শ্রী রাম বলছে। তখন ছেলেদের মধ্যে একটা উত্তেজনা তৈরি হল। তখন আমি অন্য শিক্ষক শিক্ষকাদের পরামর্শে ছাত্রছাত্রীদের নমস্কার বলে শুধু নাম বলতে অনুরোধ করি।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমি হিন্দুর ছেলে। রাম আমার খুব প্রিয়। আমি মায়ের নাম লিখে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করি।’