সাধারণ মানুষ যেখানে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পাচ্ছেন না, সেখানে দলের লোকজন ‘কুপন’ নিলেই টিকা পাচ্ছেন। এমনই অভিযোগ তুলে দলের বিরুদ্ধেই এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন হাওড়ার তৃণমূল নেত্রী। টিকা নিয়ে রাজনীতি ও টাকা তোলার অভিযোগ তুললেন হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সীমা নস্কর। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
তাঁর অভিযোগ, পুরসভার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সামনে ভোর ৫টা থেকে টিকা নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকছেন টিকাপ্রাপকরা। অথচ দলের জেলা দফতর থেকে কুপন কিনলেই আনায়াসে লাইন না দিয়েই টিকা পেয়ে যাচ্ছেন দলীয় কর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা। সীমাদেবীর বক্তব্য, ‘টিকা নিয়ে এই দলবাজি চলতে পারে না’
এপ্রসঙ্গে সীমাদেবী বলেন, ‘টিকা নিয়ে দলবাজি চলছে। আমাদেরই দলের এক নেতার বাড়ি থেকে কুপন বিলি হচ্ছে। বাছাই করা লোকেদের তা দেওয়া হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না।’ তাঁর আরও অভিযোগ, গোটা হাওড়া জুড়েই এই কাণ্ড চলছে। এমনকী ভ্যাকসিনের জন্য দলের কর্মীরা ২০০-২৫০ টাকাও নিচ্ছেন।
অবশ্য এই অভিযোগের পাল্টা সাফাই দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘ যেখানে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেই সব কেন্দ্রে বয়স্ক টিকাপ্রার্থীদের যাতে লাইনে দাঁড়াতে না হয়, সেজন্য কুপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই সবাই এই কুপনে দেখিয়ে টিকা নিচ্ছেন, এই অভিযোগ ঠিক নয়। আর কুপনের বিনিময়ে টাকা তোলার অভিযোগ পাইনি। তবুও সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’
ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিন হাওড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের টিকাদান শিবির তুলে নেওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন ওই তৃণমূল নেত্রী। টিকাপ্রাপকদের অভিযোগ, সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই টিকা কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, যাঁদের কাছে কুপন আছে, শুধুমাত্র তাঁরাই টিকা দিতে পারবেন। আর বাকিরা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেলিলিয়াস লেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে টিকা পাবেন। এর কারণ হিসেবে জানানো হয়, এত পরিমাণে টিকা তাঁদের কাছে মজুত নেই। এই কথা শোনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা টিকাপ্রাপকেরা। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা মিলছে না। অথচ শাসক দলের কর্মীদের কুপনে টিকা দিয়ে পক্ষপাতিত্ব করছে পুরসভা। এটা কীভাবে করতে পারে তারা