তিহাড় জেলের পথে যেতেও ইডি অফিসারদের স্পষ্ট উত্তর দিলেন বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার আগে ইডি তাদের হেফাজত থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে নিয়ে আসে। আর তাঁকে সামনে রেখে আদালতের কাগজপত্র তৈরি করার কাজ চলছিল। সেই কাজ চলার সময়ই অনুব্রত মণ্ডলকে একটা প্রশ্ন করেন ইডি’র অফিসার। যার উত্তর বাংলায় স্পষ্টভাবে দিয়েছেন কেষ্ট। আর তাতেই হতবাক তদন্তকারী অফিসার।
এদিকে অক্সিজেন মাস্ক, নেবুলাইজারের কথা নিয়ে আইনজীবী সম্পৃক্তা ঘোষালকে ডেকে অনুব্রত বললেন, তিহাড় জেলে অক্সিজেন মাস্ক, নেবুলাইজার, ওষুধ দেওয়া হবে তো? তখন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী তাঁকে আশ্বস্ত করে জানান, তাঁকে ওষুধ, অক্সিজেন মাস্ক, নেবুলাইজার দেওয়া হবে। আর যদি তিনি তা না পান তাহলে ফোন করে জানালে আদালতের অনুমতি নিয়ে তার ব্যবস্থা করা হবে।
ঠিক কী জবাব দিয়েছেন অনুব্রত? ইডির অফিসার কেষ্টর জন্ম তারিখ জিজ্ঞাসা করেন। তখন অনুব্রত জিভ কাটলেন। আর বলেন, ‘মনে নেই তো!’ তারপর একটু ভেবে বলেন, ‘অগ্রহায়ণ মাস। চৌঠা অগ্রহায়ণ।’ এমন বাংলায় উত্তর শুনে ইডি’র অবাঙালি অফিসার হতভম্ব হয়ে যান। তারপরই অনুব্রত মণ্ডলের আধার কার্ড খোঁজার নির্দেশ দেন অফিসার তাঁর সহকারীকে। আর অনুব্রতকে প্রশ্ন করেন, ‘জন্ম সালটা মনে আছে?’ অনুব্রত সটান বাংলায় উত্তর দিলেন, ‘আমার তো ৬৬ বছর বয়স। হিসাব করে নিন না।’
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে তিহাড় জেলে যাওয়া আটকাতে কয়েক মাস ধরে অনুব্রত মণ্ডল চেষ্টা করেছিলেন। এখন রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে ১৩ দিনের জন্য তিহাড়ে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আগামী ৩ এপ্রিল আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রঘুবীর সিং। অনুব্রত বাংলা ভাষা ছাড়া কিছু জানেন না বলে আইনজীবীরা তাঁর জন্য জেলে দোভাষীর আবেদন জানান। বিচারক জেল কর্তৃপক্ষকে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হক, সায়গল হোসেন, বিএসএফের অফিসার সতীশ কুমার তিহাড় জেলে আছেন। অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকেও তিহাড়ে। তিহার জেল সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডল সাত নম্বর সেলে থাকবেন। যদিও আইনজীবী সম্পৃক্তা ঘোষাল জানান, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার বেআইনি বলে আগেই তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়েছে। কারণ, নিয়ম মেনে গ্রেফতার করা হয়নি।