পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যু বড় ফ্যাক্টর হয়ে দেখা দিতে পারে। কারণ এবার গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে জোট বাঁধছে পাহাড়ের সবকটা রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক সংগঠন। রাজধানী নয়াদিল্লিতে তার মহড়া দেখা গেল। সেখানেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিরোধীদের সঙ্গে একমঞ্চে হাজির হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। বিরোধীদের সঙ্গে একমঞ্চে বসে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে নয়াদিল্লিতে গলাও মেলালেন দার্জিলিংয়ের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা জিটিএ সভাসদ বিনয় তামাং। যা অস্বাভাবিক লেগেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? নয়াদিল্লির ছত্তরপুর মন্দিরে দু’দিনের সম্মেলনে জড়ো হন দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং হামরো পার্টি–সহ মোট ১৯টি সংগঠন। আর দীর্ঘদিন পরে একমঞ্চে দেখা গেল বিমল গুরুং, রোশন গিরি, বিনয় তামাং এবং হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ডকে। তাঁদের দাবি একটাই, গোর্খাল্যান্ডের ইস্যুকে সামনে রেখে নতুন করে সংগঠন মজবুত করা। আর সেখানেই আশ্চর্যজনকভাবে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিনয় তামাং। বিনয় তামাংকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘পার্টি পরে, গোর্খাল্যান্ড আগে।’
ঠিক কী বলেছেন বিনয় তামাং? তাঁর এই অস্বাভাবিক উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কালিম্পংয়ের এই বিধায়ক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি জানি, তৃণমূল কংগ্রেস কখনওই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি মানবে না। কিন্তু এমন যদি সময় আসে যখন হয় গোর্খাল্যান্ডের দাবি অথবা তৃণমূল কংগ্রেস বেছে নিতে হবে। তখন আমি গোর্খাল্যান্ডের দাবিই বেছে নেব। কারণ পার্টি পরে, গোর্খাল্যান্ড আগে।’ অথচ পাহাড়ের উন্নয়নের লক্ষ্যেই এনডিএ ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয় তামাং। তারপর জিটিএ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে বিনয় তামাং জয়ী হন এবং জিটিএ’র সভাসদ হন। তাই প্রশ্ন উঠছে, দলবদল করে নতুন সমীকরণে বিনয় তামাং?
আর কে, কী বলছেন? এই গোর্খাল্যান্ডকেই ইস্যু করতে চাইছেন বাকিরাও। সংবাদমাধ্যমে বিমল গুরুংকে বলতে শোনা গেল, ‘এর মধ্যে রাজনীতি দেখবেন না। আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ছিলাম, আছি, থাকব। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যুর প্রভাব পড়তে বাধ্য।’ হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের বক্তব্যও এক। তিনি বলেন, ‘কয়েক প্রজন্ম ধরে গোর্খারা পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে আসছেন। বহু প্রাণ গিয়েছে তার জন্য। আমরা আর হানাহানি চাইছি না। সংবিধান মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দাবি আদায় করতে চাইছি আমরা। তাই পাহাড়ের সমস্ত রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক সংগঠন জোটবদ্ধ হচ্ছে।’