শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগের মধ্যেই বীরভূমে দেখা গেল চাঞ্চল্যকর এক ছবি। টাকা দিয়েও চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরতের দাবিতে তৃণমূল নেতার পা ধরে প্রকাশ্যে কান্নাকাটি করতে দেখা গেল এক যুবককে। ঘটনা বীরভূমের শান্তিনিকেতন থানা এলাকার। ঘটনায় দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বিজেপির দাবি, এভাবে বীরভূমে অন্তত হাজার পাঁচেক চাকরি হয়েছে।
বীরভূমের ইলামবাজার থানা এলাকার জয়দেবের বাসিন্দা আশিস সিংহের অভিযোগ, ২০১২ সালে শান্তিনিকেতন থানা এলাকার রূপপুরের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা রতন মণ্ডলকে ৯ লক্ষ টাকা দেন তিনি। মেয়ের প্রাথমিকে চাকরির জন্য দিয়েছিলেন এই টাকা। ১০ বছর পার হলেও চাকরি হয়নি মেয়ের। এর পর টাকার দাবিতে রতন মণ্ডলের দ্বারস্থ হন আশিসবাবু। চাপের মুখে ধীরে ধীরে টাকা ফেরাতে শুরু করেন তিনি। এভাবে ৯ লক্ষ টাকার মধ্যে ৭.৮০ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাকি ১.২০ লক্ষ টাকা দিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। সেই টাকা ফেরত চেয়ে শুক্রবার সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন আশিসবাবু।
তিনি জানিয়েছেন, নানুরের বাসাপাড়ার বাসিন্দা এক তৃণমূল নেতার মাধ্যমে মেয়ের প্রাথমিকে চাকরি করিয়ে দেবে বলেছিল রতন। সেজন্য ঘটিবাটি বিক্রি করে ওকে ৯ লক্ষ টাকা দিই। কিন্তু মেয়ের চাকরি হয়নি। চাকরি না হওয়ায় ওর কাছে টাকা ফেরত চাই। অনেক ধরাধরির পর ৭.৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আদালতের নির্দেশের পর বাকি টাকা ওর কাছে চাই। কিন্তু বাকি ১.২০ লক্ষ টাকা কিছুতেই ফেরত দিচ্ছে না ও।
এই নিয়ে নানুরের সেই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘আমার নাম করে কেউ টাকা তুলে থাকলে আমার কিছু করার নেই। যে টাকা দিয়েছে তার দেখে নেওয়া উচিত ছিল। এটা যে টাকা নিয়েছে আর যে দিয়েছে তাদের ব্যাপার।’
বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘প্রতিটা জেলায় আলাদা করে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত হওয়া উচিত। প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতারা ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এক একজন তৃণমূল নেতার বাড়িতে ৪ – ৫ জনের চাকরি হয়েছে। বীরভূমে মোট ৫ হাজার চাকরি হয়েছে এভাবে। ওদিকে ছেলে মেয়েরা সরকারি চাকরির জন্য পড়াশুনো করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।’