স্ত্রীকে প্রধান করার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। সেই টাকা দেওয়ার পরেও তৃণমূল নেতার স্ত্রীকে প্রধান করা হয়নি। ফেসবুক লাইভে এমনই অভিযোগ তুলে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের শামশেরগঞ্জের নিমতিতা এলাকায়। এমন ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। মৃত তৃণমূল নেতার নাম বিশ্বনাথ হালদার (৪৫)। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, স্ত্রীকে প্রধান করার জন্য অনেকের কাছ থেকে তিনি টাকা ধার করেছিলেন। কিন্তু, পাওনাদারদের চাপে বাধ্য হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। আত্মহত্যার আগে তৃণমূলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। এদিন সকালে বিশ্বনাথ ফেসবুক লাইভে এসে বিষ খেয়েছিলেন। ফেসবুক লাইভে তিনি নিমতিতার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মইদুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সদস্য আজহারুল হক এবং তাজমুল হক সহ আরও দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেছিলেন, স্ত্রীকে প্রধান করার জন্য গয়না বিক্রি করে টাকা ধার করে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু, প্রতিশ্রুতির মতো তাঁর স্ত্রীকে প্রধান করা হয়নি। তাই পাওনাদারদের চাপে তিনি এমন পদক্ষেপ করছেন বলে জানান। বিষ খাওয়ার পরে তাঁকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
যদিও তিনি কাকে টাকা দিয়েছিলেন সে বিষয়টি জানা নেই তার পরিবারের সদস্যদের। বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা হালদার জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী অনেকের কাছ টাকা ধার করেছিলেন। কাকে কেন সেই টাকা দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। তবে এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও কারণ রয়েছে। তৃণমূল নেতার ভাই সৌমিত্র হালদার জানান, তাঁর বউদিকে প্রধান করার জন্য চেষ্টা করছিলেন তাঁর দাদা বিশ্বনাথ। এর জন্য তিনি অনেক টাকা পয়সা জোগাড় করেছিলেন। তবে কাকে তিনি টাকা দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মইদুল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, জেলা স্তর থেকে প্রধান নির্বাচিত হয়। সে ক্ষেত্রে টাকা নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এই অভিযোগ মিথ্যা। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান নির্বাচনের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। তাই এই অভিযোগে কতটা সত্যতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
অন্যদিকে, এই নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘প্রার্থী হতে ব্যালট বক্স চুরি করা হচ্ছে। সেখানে প্রধান হতে গিয়ে ঘুষ নেওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।’ ইতিমধ্যেই মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে সেক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup