সব ঠিক থাকলে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন হবে ২০২৬ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে। সেক্ষেত্রে হাতে সময় রয়েছে একবছরের কিছু বেশি। এখন ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন সামনে আছে। সেটাকে লিটমাস টেস্ট ধরা হলে তৃণমূল কংগ্রেস কটি আসন পাবে? রাজ্য–রাজনীতির অলিন্দে এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ বিরোধী সিপিএম–বিজেপি–কংগ্রেস আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে যে পথে এগেচ্ছে তাতে সাফল্য মিলবে না বলেই মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। বরং আরও বেশি আসন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরবে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের।
এখন সিপিএম মুখে যতই বলুক তাদের ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি থেকে ফিরছে, বাস্তব সেটা বলছে না। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের কর্মসূচিতে এমনই দাবি করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন, আছেন, থাকবেনও। কারণ তাঁর পর পর সামাজিক প্রকল্প এবং বাংলাকে বিশ্ব দরবারে সম্মানের শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ রয়েছে। ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ২০২১ সালের নির্বাচনেও আসন বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। এবারও আমরা হলফ করে বলছি, আমরা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা সকলে যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে ২০২৬ সালের নির্বাচনে ২৫০ আসন আটকানোর সাধ্য অন্য কোনও শক্তির নেই।’
আরও পড়ুন: ‘অনশন প্রত্যাহার না করেই বৈঠকে যাওয়া হবে’, অনড় সিদ্ধান্ত জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা
এদিন উৎসবের প্রথম দফা শেষ হতেই তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়ল। এখন থেকেই সেই কাজ শুরু হয়ে গেল। তাছাড়া নভেম্বর মাসের উপনির্বাচনের ফলাফল অনেক কিছু পরিষ্কার করে দেবে। তাই কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের যে ৭২টি সামাজিক প্রকল্প রয়েছে, তা আবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে সমস্ত ভোটারকে ভাল করে বুঝিয়ে বলতে হবে। যাঁরা কোনও কারণে নানা পরিষেবা এবং প্রকল্পের আওতায় আসতে পারেননি, তাঁদের নিয়ে আসতে হবে। বিজেপি সরকার যে বাংলাকে বঞ্চনা করে চলেছে সেটা মানুষকে তথ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে। আবাস প্রকল্প এবং ১০০ দিনের টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন। সেটাও সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে বলতে হবে। খুন–ধর্ষণের মতো বিচ্ছিন্ন সামাজিক ব্যাধি রুখতে রাজ্য সরকার অপরাজিতা বিল পাশ করে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। সব ভোটারকে তা জানাতে হবে।’
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়েও শনিবার মুখ খোলেন কুণাল ঘোষ। তবে সেই হাসপাতালের নাম নেননি। কুণাল ঘোষের কথায়, ‘প্রথমদিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাধীদের ফাঁসি চেয়ে আসছেন। আর বিরোধীরা রাজনীতির স্বার্থে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এই জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ১৫টিতেই কেন আমরা হারলাম সেটা নিয়ে আত্মসমালোচনা করতে হবে। উন্নয়নকে মানুষ সমর্থন করলেও নিজেদের বিবাদে আমরা যে হেরে যাচ্ছি সেটা চিহ্নিত করে আসন্ন নির্বাচনে জিততে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৯৮৩ সালে জ্যোতি বসু কীভাবে পুলিশ দিয়ে লাঠি চালিয়ে ধরনায় বসা জুনিয়র ডাক্তারদের তুলে দিয়েছিলেন সে কথা বলতে হবে। বাম–অতিবাম যৌথভাবে কুৎসা–অপপ্রচার করছে। তার জবাব দিতে হবে। প্রত্যেক জেলায় মুখ্যমন্ত্রী প্রচুর নতুন হাসপাতাল করেছেন। সেখানে অনেক ডাক্তারকে পোস্টিং দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একাংশ ডাক্তার ফাঁকিবাজি করে বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করছেন। তাঁদের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য প্রশাসনে জমা দিন।’