শেখ শাহজাহান কোথায়? পুলিশ কেন এখনও ধরতে পারল না? সন্দেশখালি নাকি বাংলাদেশে রয়েছেন? এই প্রশ্নগুলি ক্রমাগত চর্চায় উঠে আসছে রাজ্য–রাজনীতিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতাকে নিয়ে এখন নানা মুনির নানা মত তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই আবহে শাহজাহানের এক ঘনিষ্ঠ দাবি করলেন, তাঁর নেতা সন্দেশখালিতেই আছেন। শুধু ডেরাটা তিনি জানেন না। এই তথ্য সামনে নিয়ে আসায় চাপে পড়েছে পুলিশ। কারণ বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাহলে পুলিশ কেন ধরতে পারছে না? সন্দেশখালিতে থাকলে তো তাঁকে ধরা উচিত পুলিশের। রাজ্যপালও কড়া মন্তব্য করেছেন।
এদিকে শেখ শাহজাহানকে নিয়ে যখন বঙ্গের রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে তখন সন্দেশখালিতে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ জিয়াউদ্দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে জানান, ‘দাদা’ কোথায় আছেন সেটা তিনি জানেন না। তবে এলাকা ছাড়েননি বলেই তাঁর দাবি। আবার শনিবার শাহজাহানের আর এক ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দাবি করলেন, ‘এলাকা ছাড়েননি শাহজাহান। এত বছর ধরে তিনি যাঁদের উপকার করে এসেছেন, এখন তাঁরাই ওঁকে এবং ওঁর পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছেন।’ এই মন্তব্যই এখন চাপ তৈরি করেছে। কারণ জানুয়ারি মাস শেষ হতে চলল অথচ পুলিশ শাহজাহানের নাগালই পেল না। যা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘লাদেনের মতো অবস্থা হবে শেখ শাহজাহানের।’
অন্যদিকে এখনও পুলিশের জালে ধরা পড়েননি ইডি অফিসারদের উপরে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। তার মধ্যে রাজ্যপাল থেকে কলকাতা হাইকোর্ট, সবাই ভর্ৎসনা করেছে জেলা পুলিশকে। এই পরিস্থিতিতে ন্যাজাট থানাকে সরিয়ে দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে সিটকে। তবে এখনও পর্যন্ত সন্দেশখালিতে কারও চরণধূলি পড়েনি বলেই খবর। তবে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠদের একজন শনিবার জানান, শাহজাহান এলাকায় আছেন। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এখন কথা বলতে চাইছেন না। প্রয়োজন মতো তিনিই ডাক দেবেন। এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে সিট এখনও কী করছে?
আরও পড়ুন: ‘সংহতি মিছিল’–এর ব্যানার–পোস্টারে শুধুই মমতার ছবি, জেলায় চিঠি পাঠাল তৃণমূল
গত ৫ জানুয়ারি, শুক্রবার ইডি অফিসারদের উপরে হামলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ছুটে পালান। সে দৃশ্য দেখেছিল সবাই। তারপর থেকেই অধরা শাহজাহান শেখ। এই পরিস্থিতিতে শাহজাহানের সঙ্গীর দাবি, শাহজাহান তাঁকে বলেছেন সে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। এমনকী ইডির অফিসারদের উপরে হামলার ঘটনাতে তিনি জড়িত নন। বিচারের জন্য আদালতে যাবেন। বিজেপি ইডিকে দিয়ে চক্রান্ত চালাচ্ছে। শাহজাহান তাহলে বাংলাদেশে গা–ঢাকা দেননি? ঘনিষ্ঠদের মন্তব্যে সেটাই প্রমাণ হয়। তাহলে পুলিশ এবং সিট কেন নাগাল পাচ্ছেন না শাহজাহানের? উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘শাহজাহানকে পুলিশ আগলে রেখেছে। আমি জানি শাহজাহান কোথায়, আর পুলিশ জানে না? সিট তদন্ত করবে। কিন্তু সেই দলে রাজ্য পুলিশ থাকলে শাহজাহানকে ধরতে পারবে না।’