গতবছরই মুর্শিদাবাদের নওদাতে ঘিরে ধরে পরপর গুলি করে খুন করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা মনিরুল ইসলামকে। কতকটা সেই কায়দায় আজ সাতসকালে বাজারের চায়ের দোকানে গুলি করে খুন করা হল এক তৃণমূল নেতাকে। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকায়। মৃত নেতার নাম আমোদ আলি বিশ্বাস, বয়স ৪৫ বছর। তিনি রামনগর বড় চুপড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সহ-সভাপতি ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে হাই কোর্টের পরামর্শের পরই আরও তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মীদের)
জানা গিয়েছে, সকালে বাড়ি থেকে বাজার করার জন্য স্থানীয় রামনগর বড় চুপড়িয়া বাজারে গিয়েছিলেন আমোদ আলি। সেখানে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। তখনই সেখানে আট-দশজন দুষ্কৃতী হাজির হয় বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমোদ আলিকে ঘিরে ধরে সেই দুষ্কৃতীরা পরপর গুলি করতে থাকে। দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে জখম হয়ে প্রাণভয়ে পালানোর চেষ্টা করেন আমোদ আলি। তখন তাঁকে তাড়া করে গুলি করতে থাকে দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হয়ে বাজারেই লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় ঘটনাস্থল থেকে পালান স্থানীয়রা। আমোদ আলিকে কেউ বাঁচাতে আসতে পারেননি সাহস করে। এদিকে ঘটনার পর থমথমে পরিস্থিতিে রামনগরে। হাঁসখালি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ঘটনার।
আরও পড়ুন: রবিতে সল্টলেক থেকে গঙ্গার নীচে দিয়ে হাওড়া ময়দান যাবে মেট্রো, হবে ট্রায়াল রান
আমোদ আলিকে কেন খুন করা হল, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কারণ আছে, নাকি ব্যক্তিগতক শত্রুতার জেরেই এই খুন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকেই আততায়ীদের সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। তবে হামলার সময় দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকেরই মুখ ঢাকা থাকায় প্রত্যক্ষদর্শীরাও সেভাবে কিছু দেখতে পাননি। এদিকে পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যে বাড়ছে খুন, অশান্তির ঘটনা। তৃণমূল নেতাকে যেভাবে খুন করা হয়েছে, তাতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রসঙ্গত, আজই ভোররাতে কোচবিহারের শীতকুচিতে বাড়িতে ঢুকে তৃণমূলের এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর স্বামী ও এক মেয়েকে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা।
এদিকে নদিয়ার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'এই ঘটনা যারাই ঘটাক কেউ পার পাবে না। দৃষ্কৃতীরা শাস্তি পাবে।' বিজেপির ঘাড়ে এই ঘটনার দোষ চাপানোর চেষ্টা করে তিনি বলেন, 'পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে বিরোধীরা ততই উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলছে। ভাড়াটে খুনি নিয়ে আসছে। বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা।' এদিকে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এই ঘটনাকে তৃণমূলের অন্তরদ্বন্দ্ব বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস এমনভাবে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে, যে পঞ্চায়েতের আগে ক্ষমতা দখলের লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে।'