বারবারই তিনি সোজা ব্যাটে ছক্কা হাঁকিয়েছেন। রেয়াত করেননি কাউকে। সম্প্রতি দলের লাইন না মানায় ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্যকে বহিষ্কার করেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ। এবার তিনি হুঙ্কার দিলেন। তিনি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে যদি জেতাতে না পারেন তবে আপনাদের পঞ্চায়েতি, প্রধানি সব শেষ’। দিনহাটার বড়শাকদল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দলের কর্মীসভাতে এই ভাষাতেই পঞ্চায়েত প্রধানদের সতর্ক করলেন তিনি।
এই মন্তব্য করার পর গোটা জেলায় জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই হুঁশিয়ারিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে তিনি এখানে থেমে থাকেননি। স্টেপ আউট করে খেলে তিনি বলেন, ‘নিজেরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হবেন আর অন্য নির্বাচনে দল হারবে এটা মেনে নেওয়া হবে না।’ এখন তৃণমূল কংগ্রেস বহরে রোজ বাড়ছে। ভাঙছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব আসন দখলে রাখতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই হুঙ্কার বলে মনে করা হচ্ছে।
রবিবার রাতের দলীয় সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, গত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে দিনহাটার এই অঞ্চলে তিন হাজারের বেশি ভোটে বিজেপির কাছে হেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তিনি বলেন, ‘ভাইয়েরা, মা–বোনেরা দলের সভাতে ভিড় করে এলেও ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে। এটা আমাদের নেতাদের বুঝতে হবে। নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা রয়েছে। নেতাদের কাজে সমস্যা রয়েছে বলেই মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিচ্ছে না।’
এই পরাজয়ের কারণ জনসংযোগের অভাব বলে তিনি মনে করেন। তাই তিনি বলেন, ‘নিচুতলার নেতৃত্বের সঙ্গে মানুষের কেন দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা বুঝতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে৷ মানুষ সভায় এলেও কেন ভোট দিচ্ছে না? তা নেতাদের বুঝতে হবে।’ ফলে দলীয় নেতাদের উপর চাপ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এদিনের সভায় উদয়ন গুহ বলেন, ‘আজকে মা–বোনেরা যেভাবে উপস্থিত হয়েছেন, সেই ভেবে যদি ভোটটা দিতেন, তবে আমরা হারতাম না। আমরা দিনহাটায় জিততাম। কিন্তু আপনারা নানা কারণে ভোটটা বিজেপিকে দিয়েছেন।’ অর্থাৎ বিজেপিকে কোনও ভোট দেওয়া যাবে না তাও পরিষ্কার করে দেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।