প্রবল বর্ষণে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয়। ভুটান ও সিকিম থেকে নেমে আসা জলে তিস্তা, রায়ডাক সহ একাধিক নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। বহু এলাকা জলে ডুবে, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই অবস্থার জন্য কেন্দ্রকে পুরোপুরি দায়ি করল তৃণমূল। দলের অভিযোগ, এই ভয়াবহতা ঠেকানো যেত, যদি কেন্দ্র সময়মতো পদক্ষেপ করত।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয়, পরিদর্শনে যাচ্ছেন মমতা, পর্যটকদের সতর্ক থাকার বার্তা
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠনের বিষয়টি কার্যকর করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। এই কমিশন না থাকায় দুই দেশের সীমান্তবর্তী নদীগুলির জলনিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় সম্ভব হয়নি। ফলে পাহাড়ি ঢল বেয়ে জল নামলেই উত্তরবঙ্গকে তার খেসারত দিতে হচ্ছে। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি আবারও তুলেছেন সামনে। তাঁর বক্তব্য, ইন্দো-বাংলাদেশ রিভার কমিশন যখন রয়েছে, তাহলে ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠনে এত অনীহা কেন? এটি তো প্রয়োজনীয় এবং যৌক্তিক উদ্যোগ।তিনি দাবি করেছেন, রায়ডাক, সংকোশ, তিস্তা সব নদীর জল বেড়েছে মূলত ভুটান পাহাড়ে অতিবৃষ্টির কারণে। ফলেই উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সময়মতো কেন্দ্র যদি এই যৌথ কমিশন গঠন করত, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেকটাই কমানো যেত।
জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে অবশ্য রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তরে জানানো হয়েছে, আপাতত ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠনের কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের কাছে। এই বক্তব্যের পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষা উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এমন অঞ্চলে জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সমন্বয় অপরিহার্য।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, সোমবার তিনি নিজে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নিয়ে সরাসরি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বিপর্যস্ত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের বক্তব্য, নদী সম্পর্কিত পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদি সমন্বয়ের অভাবই এখন রাজ্যের সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে ফেলছে।