প্রায় পাঁচ-ছয় বছরের পুরোনো বিস্ফোরণের মামলায় এবার ১০ বছর হাজতবাস করতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মীকে। সঙ্গে দিতে হবে আর্থিক জরিমানাও। শনিবার তাঁর জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত এবং সাজাপ্রাপ্ত ওই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর নাম বাবলু মণ্ডল। তিনি বীরভূম জেলার লোকপুর থানা এলাকার অন্তর্গত গাংপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। ওই দিন বাবলু মণ্ডলের বসত ভিটে কেঁপে ওঠে বিস্ফোরণের অভিঘাতে। তবে, ঘটনাচক্রে সেই সময় বিস্ফোরণস্থলে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ফলে কারও মৃত্যু হয়নি। কেউ আহতও হননি। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনের বছরে এমন ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়ায়।
প্রাথমিকভাবে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা - সিআইডি। তদন্ত শুরু হওয়ার পর জানা যায়, বাড়িতে মজুত করে রাখা বিস্ফোরক ফেটেই ঘটেছে অঘটন। আরও জানা যায়, সেই বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা ছিল একটি টিনের বাক্সে।
এই ঘটনায় তৃণমূল কর্মী বাবলু মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হতে হয় তাঁর দুই ছেলে মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল ও নিরঞ্জন মণ্ডলকেও। কিন্তু, পরে তিনজনই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান।
এরপর এই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার যায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা - এনআইএ -র হাতে। তাদের তদন্তে উঠে আসে, ২০১৯ সালের যে সময় লোকসভার নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছিল, সেই সময় থেকেই বাবলু মণ্ডল তাঁর বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত করে রেখেছিলেন। তাছাড়া, বিস্ফোরণের পর তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
সবদিক খতিয়ে দেখার পর 'এক্সপ্লোসিভ সাবস্টেন্স অ্যাক্ট' অনুসারে মামলা রুজু করা হয়। নতুন করে এই মামলার শুনানি শুরু হয় এনআইএ বিশেষ আদালতে। গত বৃহস্পতিবার এই আদালতেই দোষী সাব্যস্ত হন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বাবলু মণ্ডল।
শনিবার বিচারক এই মামলায় সাজা ঘোষণা করেন। বাবলুকে ১০ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয় আদালতের পক্ষ থেকে।
তবে, এই মামলায় অন্য দুই অভিযুক্ত - অর্থাৎ - বাবলুর দুই ছেলে মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল ও নিরঞ্জন মণ্ডল আপাতত পলাতক বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, আগামী দিনে তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলবে।