রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যখন ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তখনই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এই বন্যা ম্যান–মেড। অতিরিক্ত জল ছেড়েছে ডিভিসি। তাই এই পরিস্থিতি। প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা অধুনা বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন, পরিকল্পনার অভাবে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দোষারোপ ও পাল্টা দোষারোপের তরজায় এবার তোপ দাগলেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর দাবি, শুভেন্দুর জন্যই মানুষকে এই জল–যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে এখন তোলপাড় পূর্ব মেদিনীপুর। গতকাল নন্দীগ্রামে বিজেপি থেকে প্রায় একশো নেতা–কর্মীকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করানো হয়। সেখানে অখিল গিরি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রামে কারচুপি করে জিতেছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশন সেন্ট্রাল ফোর্স–সহ অন্যান্য বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রার্থীকে হারিয়েছে।’ ইতিমধ্যেই এই নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে।
এখানেই শেষ নয়। অখিল গিরি রীতিমতো অভিযোগ করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক দুর্নীতি করেছেন এবং কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। শুভেন্দু কাজ করতে পারেননি। তাঁর ব্যর্থতা আমাদের উপরে চাপানোর চেষ্টা করছেন।’ ইয়াস ঘূর্নিঝড়ের পর নবান্ন থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার সেই তদন্তই কার্যত উসকে দিলেন অখিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
তিনি জানান, এই প্রথম সামুদ্রিক জলোচ্ছাসের ফলে যে বিপুল ক্ষতি হয়েছিল মৎস্য চাষে তাতে করে বেকিস ওয়াটারের (চিংড়ি) চাষের ক্ষেত্রে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। হয়তো সেটা যথেষ্ট নয়, কিন্তু দেওয়া হয়েছে প্রথম বেসরকারি মৎস্যজীবিদের। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন একজনকে সেচ দফতরের। তিনি ডুবিয়ে দিয়েছেন জেলাকে। কোনও কাজ করেননি। সেচ দফতরে শুধু দুর্নীতি করেছেন। যার জেরে আজ বেহাল অবস্থা।’ তবে অখিলের সভায় জনসমাগম নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।