রথের মেলায় ঘুরতে ঘুরতে খিদে তো পায়ই। তখন চোখ যায় নানা মুখরোচক খাবারের দিকে। পথের ধারের সেই খাবার ভাল–মন্দ বিচার না করেই খেয়ে ফেলেন অনেকে। তার পর পেটের গণ্ডগোল দেখা দেয়। আবার অনেক সময় দেখা দেয়ও না। আসলে হরেক খাবারের পসরা দেখে লোভ লেগে যায় মানুষজনের। আর এবার রথের মেলায় বসা খাবার খেয়েই ঘটল বিপত্তি। মোমো খেয়ে এবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন প্রায় ৫০ জন মানুষ বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থদের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্য়ের কারামন্ত্রী অখিল গিরি। চিকিত্সার জন্য় সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর ২ নম্বর ব্লকে।
প্রত্যেক বছর এখানে রথের মেলা বসে। রথ উৎসবও বড় করে পালন করা হয়ে রামনগর ২ নম্বর ব্লকের মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুমুরিয়া গ্রামে। তাই প্রত্যেকবারের মতো এবারও বসে রথের মেলা। সেখানে ভিড় জমান পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষজন। আড্ডা, গল্প থেকে খাওয়াদাওয়া সবই চলে। কিন্তু রথের মেলায় যে খাবার খাওয়া হয় তা কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। এটা ঘটনা ঘটার পর স্বীকার করেছেন ডুমুরিয়া রথ উৎসব কমিটির সম্পাদক তমালতরু দাস মহাপাত্র। এবারও এখানে বহু মানুষজন ভিড় করে মোমো খেয়েছেন। এই বিষয়ে তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, ‘রবিবার এবং সোমবার মেলার একটি দোকান থেকে মোমো খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বহু মানুষজন। হাসপাতালে তাঁরা ভর্তি সকলেই। এই খবর পেয়েই মোমোর দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: আবার মুখোমুখি হতে চলেছেন মমতা–মোদী, কোন রসায়নে দু’পক্ষের সাক্ষাতের সম্ভাবনা?
পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা বোঝা যায় রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি হাসপাতালে ছুটে আসায়। এটা তাঁরই এলাকা। সেখানে এমন ঘটনা ঘটলে তাঁকে উদ্যোগ নিতেই হবে। এই ঘটনার পর মন্ত্রী অখিল গিরি জানান, কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৪ জন। মাজনা হাসপাতালে ১৯ জন ভর্তি রয়েছেন। আর বড় রাঙুয়া হাসপাতালে এখন ১২ জন চিকিৎসাধীন। এদিন মাজনা হাসপাতালে অসু্স্থদের সঙ্গে দেখা করেন অখিল গিরি। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার অরূপ রতন করণের বক্তব্য, সাতজন মহিলা এবং সাতজন পুরুষ রোগী এখানে ভর্তি ছিলেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন তাঁরা।’
এখন যে তিনটি হাসপাতালে মানুষজন ভর্তি আছেন তার যোগফল করলে দাঁড়ায়, ৪৫ জন। সংখ্যাটা আরও বাড়ে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। কারণ ওই মোমো থেকে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। আর তাই একের পর এক মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে মহিলারা বেশি অসুস্থ হয়ে ভর্তি আছেন বলে জানা যাচ্ছে। সোমবার ছিল উল্টোরথ। আর বুধবার ছিল মেলার শেষদিন। সেদিনই মোমো খেয়ে বাড়ি ফেরেন অনেকে। রথের মেলা থেকে বাড়ি ফিরে পেট কামড়াতে থাকে। তাতে বমি শুরু হয়। পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় মানুষজনকে।